কানপুরে শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে ভারতের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট। ম্যাচের আগের দিন বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ দলের প্রতিনিধি হয়ে এলেন সাবেক অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
বাংলাদেশ দল যখন ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে নামার অপেক্ষায়, ঠিক তখনই যেন সব আলো নিজের দিকে কেড়ে নিলেন সাকিব।
এদিনই আন্তর্জাতিক টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেন তিনি।
ক্যারিয়ার শেষের ইঙ্গিতটা অবশ্য দিয়ে রেখেছিলেন আগেই। গেল বছরের নভেম্বরে ভারতের মাঠে ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার আগেই সাকিব বলেছিলেন, খুব শিগগিরই ক্যারিয়ার শেষ করতে চান তিনি। এবার কানপুর টেস্টের আগে দেওয়া ঘোষণাই যেন সেই কথার বাস্তব রূপ পেল।
অবসরের ঘোষণা দিয়ে সাকিব সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমার মনে হয় টি-টোয়েন্টিতে আমি আমার শেষ ম্যাচ খেলে ফেলেছি, মিরপুর টেস্টে (দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে) খেলতে পারলে সেটি হবে আমার শেষ টেস্ট’।
আজকের এ ঘোষণার পর, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার এইটে আফগানিস্তানের বিপক্ষে যে ম্যাচটা খেলেছিলেন, সেটাই এখন ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম সংস্করণে সাকিবের শেষ ম্যাচ হয়ে গেল।
এ বিষয়ে সাকিব বলেন, ‘সামনের সিরিজগুলো আমার খেলার কোনো কারণ আছে বলে মনে করি না। অধ্যায়টি স্মরণীয় ছিল, তবে এখন পরবর্তী প্রজন্মের কাছে মশাল তুলে দেওয়ার সময়।’
সিদ্ধান্তটি সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলেই নিয়েছেন সাকিব। বললেন, ‘আমার মনে হয় নতুনদের সুযোগ দেওয়া উচিত। তাদের দেখার এটাই সবচেয়ে ভালো সুযোগ। বাংলাদেশ ক্রিকেট যদি ২০২৬ সালের দিকে তাকায়, তাহলে এটাই বাংলাদেশের জন্য ভালো। আমরা সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সবাই একমত।’
আপাতত টি-টোয়েন্টি নিয়ে ভাবনা না থাকলেও ফেরার একটা ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন ৩৭ বছর বয়সি এ অলরাউন্ডার। তিনি বলেন, ‘একই সময় আমি যদি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলার সুযোগ পাই, ওখানে ভালো করতে থাকি; ৬ মাস এক বছর পর যদি কখনো বিসিবি মনে করে যে, না টি-টোয়েন্টিতে আমার অবদান রাখার একটা সুযোগ আছে, আমি পারফর্ম করছি এবং ফিট আছি। তখন আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারি। তবে এ সময় আমি নিজেকে টি-টোয়েন্টিতে দেখছি না। আপনারা বলতেই পারেন, দুটা সংস্করণে আমি আমার শেষটা দেখছি।’
সাকিবের টি-টোয়েন্টি অভিষেক হয়েছিল ২০০৬ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খুলনা শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে। ব্যাট হাতে ২৬ রান আর বল হাতে ১ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের জয়ের সাক্ষী হয়েছিলেন সাকিব। দেশের ইতিহাসের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচেই ছিলেন তিনি। এরপর প্রতিনিধিত্ব করেছেন টানা ৯টি বিশ্বকাপে।
দেড়যুগের লম্বা ক্যারিয়ারে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ১২৯ ম্যাচে ২ হাজার ৫৫১ রান করেছেন সাকিব। ১২১ এর বেশি স্ট্রাইক রেট আর ২৩.১৮ গড় বাংলাদেশের সাপেক্ষে তাকে রাখবে ওপরের দিকেই। বল হাতে এই ফরম্যাটে পুরো বিশ্বে অনেকটা দিন ছিলেন শীর্ষ উইকেটশিকারী। শেষ পর্যন্ত থেমেছেন ১৪৯-এ।
প্রায় প্রতি ২১ রানে একটা করে উইকেট পেয়েছেন তিনি। বাংলাদেশের পক্ষে টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ রান (২৫৫১) ও উইকেটের (১৪৯) মালিক সাকিব আল হাসান।
Leave a Reply