আমাদের সমাজে অনেক দম্পতিদের একে অন্যকে কথা বলার বা ডাকার সময় ‘ভাই’ ও ‘বোন’ বলে সম্বোধন করে।
কিন্তু স্বামীকে ভাই বলে বা স্ত্রীকে বোন বলে সম্বোধন করা মাকরুহ। হাদিস শরিফে এভাবে সম্বোধন করতে নবীজি (সা.) নিষেধ করেছেন। আবু তমিমা আল জুহামী (রা.) বলেন, أَنَّ رَجُلًا قَالَ لِامْرَأَتِهِ يَا أُخَيَّةُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أُخْتُكَ هِيَ فَكَرِهَ ذَلِكَ وَنَهَى عَنْهُ
অর্থ: ‘এক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে বললো, হে আমার বোন! আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, সে কি তোমার বোন? তিনি তার এ রকম সম্বোধনকে অপছন্দ করলেন এবং এ রকম সম্বোধন করতে নিষেধ করলেন’। (সুনানে আবু দাউদ: ২২০৪)
উক্ত হাদিসের আলোকে ফকিহরা বলেছেন, স্ত্রীকে বোন বলে সম্বোধন করা মাকরুহ। (আদ্দুররুল মুখতার: ৩/৪৭০) আর তাই স্বামী স্ত্রীকে বোন, আপু ইত্যাদি বলে সম্বোধন করা থেকে বিরত থাকবে, স্ত্রীও স্বামীকে ভাই, ভাইয়া ইত্যাদি সম্বোধন করা থেকে বিরত থাকবে।
তবে কেউ যদি স্ত্রীকে বোন বা আপু বলে ডাকে, তাহলে তাদের বৈবাহিক সম্পর্কের কোনো ক্ষতি হবে না।
স্বামী-স্ত্রী পরস্পরকে এমন শব্দ বা নামে ডাকা সমীচীন যা থেকে স্বাভাবিক সম্মান ও ভালোবাসা প্রকাশ পায়, অসম্মান প্রকাশ না পায়। তারা পরস্পরকে সন্তানদের নামের সঙ্গে সম্পৃক্ত করে ডাকতে পারে। নাম ধরেও ডাকতে পারে যদি তা তাদের সংস্কৃতিতে অপমানসূচক না হয় এবং কেউ অপমান বোধ না করে।
আরবের সংস্কৃতিতে স্ত্রীকে ও স্বামীকে নাম ধরে বা সন্তানের নামের সঙ্গে সম্পৃক্ত করে ডাকার প্রচলন ছিল। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, যখন আল্লাহর রাসূল ইব্রাহিম (আ.) তার স্ত্রী হাজেরা এবং শিশু পুত্র ইসমাইলকে মক্কার জনমানবহীন প্রান্তরে রেখে চলে যাচ্ছিলেন, তখন পেছন থেকে তার স্ত্রী তাকে ডেকে বললেন, ‘হে ইব্রাহিম, তুমি আমাদের এমন জনমানবহীন উপত্যকায় রেখে কোথায় যাচ্ছ’? (সহিহ বুখারি: ৩৩৬৫)
তবে কোনো অঞ্চলের সামাজিক সংস্কৃতিতে স্বামীর নাম ধরে ডাকা সম্মানজনক না হলে এবং স্বামী পছন্দ না করলে নাম ধরে ডাকা থেকে বিরত থাকতে হবে এবং কোনো সম্মানজনক শব্দে তাকে ডাকতে হবে।
ইয়া আল্লাহ! মুসলিম উম্মাহর সব দম্পতিদের একে অন্যকে সম্মান সূচক সম্বোধনে ডাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।
Leave a Reply