রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ, সংবিধান সংশোধন, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের বিগত তিনটি সংসদ নির্বাচন অবৈধ ঘোষণা, ছাত্রলীগ নিষিদ্ধসহ মোট পাঁচ দফা নতুন দাবি ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে এসব দাবি ঘোষণা করেন প্ল্যাটফর্মটির কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। এসব দাবি অবিলম্বে মেনে নেয়া না হলে শিগগিরই রাজপথে কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে বলে এ সময় হুঁশিয়ারি দেন তিনি। এছাড়া আরেক সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ ছাত্রলীগ নিষিদ্ধে সরকারকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আলটিমেটাম দিয়েছেন।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, সেদিন শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবি এই শহীদ মিনার থেকে দেয়া হয়েছিল। আজও এই শহীদ মিনার থেকেই ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করা, রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ করানো এবং সংবিধান বাতিলসহ বিভিন্ন বিষয়ে ৫ দফা ঘোষণা দিতে যাচ্ছি।
পাঁচ দফা দাবি- ১. অনতিবিলম্বে ৭২ এর সংবিধান বাতিল করতে হবে। সেই জায়গায় ২৪ এর গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষ থেকে নতুন করে সংবিধান লিখতে হবে। ২. এই সপ্তাহের মধ্যে ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। তাদেরকে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করতে হবে। ৩. এই সপ্তাহের মধ্যে বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দীনকে পদচ্যুত করতে হবে। ৪. জুলাই বিপ্লব ও গণ-অভ্যুত্থানের স্পিরিটের আলোকে ২৪ পরবর্তী বাংলাদেশ বিনির্মাণে এই সপ্তাহের মধ্যে নতুন করে রূপরেখা প্রণয়ন করতে হবে। ৫. ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনকে অবৈধ ঘোষণা করতে হবে। এসব নির্বাচনে যারা নির্বাচিত হয়েছিল তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে হবে। একই সঙ্গে তারা যেন ২৪ পরবর্তী বাংলাদেশে কোনোভাবেই প্রাসঙ্গিক হতে না পারে এবং নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে সেজন্য আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে হাসনাত বলেন, অনলাইনে সক্রিয় ছাত্রলীগ, যুবলীগ এবং আওয়ামী মুজিববাদীদের বলতে চাই, আমাদের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। আমরা রাজপথে নেমে পুলিশ লীগের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে জয়ী হয়েছি। মৃত্যুর ভয় আমরা পাই না। মৃত্যুর পরোয়া আমরা করি না। শেখ হাসিনাকে পুনর্বাসিত করার স্বপ্ন ভুলে গিয়ে নিজেরাই বিচারের আওতায় চলে আসুন। শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে আসব। আমাদের বিপ্লব শেষ হয়ে যায়নি। আমরা ৫ আগস্ট শেখ হাসিনাকে উৎখাত করতে পারলেও এখন পর্যন্ত রাজনৈতিক বন্দোবস্ত করতে পারিনি। বিগত ১৬ বছর বিএনপি, জামায়াত, শিবির, ছাত্রদলের নেতাদের নির্যাতিত হতে দেখেছি। যতদিন পর্যন্ত সুষ্ঠু ধারার রাজনৈতিক সংগঠনগুলোকে আমরা ভালো পরিবেশ করে দিতে না পারছি, ততদিন পর্যন্ত আমাদের বিপ্লব শেষ হবে না।
গণজমায়েতে সারজিস আলম বলেন, আবারও যদি প্রয়োজন হয়, আমরা আমাদের চোখ দিতে প্রস্তুত, পা দিতে প্রস্তুত, হাত দিতে প্রস্তুত, এমনকি জীবন দিতে প্রস্তুত আছি। ফ্যাসিস্ট দল ছাত্রলীগ যেভাবে আমাদের ভাইদের হত্যা করেছে, তাদের উত্থান সহ্য করা হবে না।
Leave a Reply