সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় বাবার মরদেহ উঠানে ফেলে রাখলেন সন্তানরা!

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় আবু মোতালেব (৬৫) নামের এক বৃদ্ধের মরদেহ উঠানে ফেলে রাখেন সন্তানেরা। এতে এলাকাজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হওয়ায় স্থানীয়ভাবে মীমাংসার পর মরদেহ দাফন করা হয়েছে।

শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে উপজেলার রনচন্ডী ইউনিয়নের কিশামত বীচচরণ মিস্ত্রিপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এর আগে বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ওই বৃদ্ধ।

পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, আবু মোতালেব তার প্রথম স্ত্রী মতিয়া বেগম ও তার দুই মেয়েকে রেখে হাজেরা বেগম নামে এক নারীকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তিনি তার প্রথম স্ত্রী ও সন্তানদের তার সকল সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করেন এবং তাদের কোনো খোঁজখবর নেননি। তিনি প্রথম স্ত্রীকে বাড়ির বাইরে রেখে তার দ্বিতীয় স্ত্রী হাজেরা বেগমকে নিয়ে বাড়িতে বসবাস করতেন। পরে এলাকাবাসীর সহায়তার তার প্রথম স্ত্রী মতিয়া বেগমের দুই মেয়ের বিয়ে হয়। বিয়ের পর আবু মোতালেব তার দুই মেয়ের কোনো খোঁজখবর নেন না। পরে তার প্রথম স্ত্রী মতিয়া বেগম বাড়ির বাইরে মানবেতর জীবনযাপন করেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে মোতালেব হঠাৎ অসুস্থ পড়লে তাকে চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মারা যাওয়ার পর গতকাল সন্ধ্যায় তার মরদেহ দাফনের জন্য নিজ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। এ সময় তার প্রথম স্ত্রীর দুই মেয়ে এসে সম্পত্তি তাদের নামে লিখে না দেওয়ায় মরদেহ দাফনে বাধা দেন। এতে স্থানীয়রা মীমাংসার করে তার মৃত্যুর একদিন পর শুক্রবার রাত ৮টার দিকে তার মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

মৃত মোতালেবের শ্যালক বেলাল মুন্সি বলেন, আমার দুলাভাই বেঁচে থাকতে দুইটি বিয়ে করেছিলেন। তিনি তার বড় স্ত্রী মানে আমার বোনকে কিছু না দিয়ে তার ছোট স্ত্রীকে সব সম্পত্তি লিখে দেন বলে জানতে পারি। তার বড় স্ত্রীর মেয়েদের সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় তার মরদেহ দাফন করতে দেয়নি। মরদেহ আটকে রাখার একদিন পর আজ স্থানীয়রা মীমাংসা করে মরদেহ দাফন করেন। মৃত ব্যক্তির ভাইয়েরা দায়িত্ব নিয়েছেন, তার বড় স্ত্রীর দেনমোহর ও আমার দুলাভাইয়ের সম্পত্তির অংশ তার ছোট স্ত্রীর থেকে নিয়ে বড় স্ত্রীর মেয়েদের লিখে দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মজনু মিয়া মধু বলেন, মৃত মোতালেব তার সম্পত্তির ভাগ মেয়েদের লিখে না দেওয়ার কারণে মেয়েরা মরদেহ আটকে দিয়েছিল। একদিন পর স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করে আজ সন্ধ্যায় তার মরদেহ দাফন করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *