প্রধান উপদেষ্টার কাছে আজ রোববার (১ ডিসেম্বর) জমা দেওয়া বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থা বিষয়ক শ্বেতপত্রের খসড়ায় বলা হয়েছে, নিয়ন্ত্রক সংস্থার ‘দুর্বল’ হিসেবে চিহ্নিত ১০টি ব্যাংকের সবগুলোই টেকনিক্যালি দেউলিয়ার দ্বারপ্রান্তে ও অচল।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুধু মূলধন আর তারল্যই ‘দুর্বল’ পরিস্থিতিতে একটি ব্যাংকের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারে।
এতে বলা হয়েছে, ‘আমরা ১০টি দুর্বল ব্যাংককে তাদের সলভেন্সি ও তারল্য পর্যালোচনা করার জন্য বেছে নিয়েছি। ১০টি ব্যাংকের মধ্যে দুটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক, যেগুলো গত দশকে কেলেঙ্কারির শিকার হয়েছে। বাকি আটটি অত্যন্ত দুর্বল শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক ও প্রচলিত বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক।’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গোপনীয়তা রক্ষা করার জন্য ব্যাংকগুলোর নাম প্রকাশ করা হয়নি। নিয়ন্ত্রক সংস্থা, গণমাধ্যম ও জনসাধারণের কাছে এই ১০টি ব্যাংকই ‘দুর্বল’ হিসেবে আগেই চিহ্নিত হয়েছে।
এই ১০টি ব্যাংকের সমন্বিত ঋণ ও আমানত মোট ঋণের ৩৩ শতাংশ এবং ব্যাংক খাতের মোট আমানতের ৩২ শতাংশ।
এতে বলা হয়, সম্পদের সম্মিলিত সমন্বয়কৃত মূল্য ছিল প্রদর্শিত মূল্যের ৫২ শতাংশ। ফলে, নিট মূল্য ঋণাত্মক।
তরল সম্পদের সঙ্গে মোট বাস্তব সম্পদের অনুপাতের মাধ্যমে পরিমাপ করা তারল্য অনুযায়ী জানা যায়, ১০টির মধ্যে ৮টি ব্যাংকই তারল্য বা নগদ সংকটে রয়েছে। এতে আরও বলা হয়েছে, সবগুলো ব্যাংককেই ‘অতি দুর্বল’ হিসেবে রেটিং দেওয়া হয়েছে।
মূলত, একটি ব্যাংকের আর্থিক প্রোফাইল আমানতকারীদের চাহিদা পূরণের জন্য সলভেন্সি এবং তহবিল কাঠামো এবং তরল সম্পদের অংশ হিসেবে মুনাফা, এনপিএল এবং মূলধনের ওপর নির্ভর করে।
‘সবগুলো ব্যাংকই সম্পদ ও মূলধনের দিক থেকে অত্যন্ত দুর্বল। এদের মধ্যে দুটি ব্যাংকের সম্পদের পরিমাণ মধ্যম পর্যায়ের, বাকি ৮টি প্রায় অচল।ব্যাংকগুলো স্পষ্টতই তাদের বাধ্যবাধকতা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। তারা বাজার থেকে সমর্থন পাচ্ছেন না এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে তাদের সমর্থনের আশা শেষ হয়ে গেছে। বর্তমানে তারা টিকে থাকার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্যারান্টি স্কিমের আওতায় আশ্রয় নিচ্ছে।’
এতে আরও বলা হয়েছে, ‘জনসাধারণ ক্রমান্বয়ে জেনে গেছে যে এই ব্যাংকগুলো খেলাপি আর্থিক খাত-বহির্ভূত কর্পোরেট, দেউলিয়া আর্থিক কর্পোরেট এবং অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানগুলোতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বিনিয়োগ করেছে। সুতরাং, বাস্তবতা এবং প্রদর্শিত সম্পদের মধ্যে বিশাল পার্থক্যের ফারাকে অবাক হওয়ার কিছু নেই।’
Leave a Reply