প্রয়োজনে বাংলাদেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষাবাহিনীর সদস্য পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এজন্য দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তিনি।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে প্রশ্নোত্তরপর্বে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির সঙ্গে সহনীতি অনুসরণ করার কথাও ঘোষণা করেন।
এছাড়া ভারতীয় সংসদে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়ে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি দাবি জানান মমতা।
এদিন অধিবেশনের শুরু থেকেই বিরোধী বিজেপি বিধায়করা শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের দাবি জানান। বাংলাদেশ ইস্যুতে মমতার অবস্থান কী সেটা তুলে ধরার দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই তার নিয়মিত প্রশ্নোত্তরপর্বে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ আনেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমাদের পরিবারের সদস্য, সম্পত্তি এবং প্রিয়জনেরা বাংলাদেশে আছে। এই বিষয়ে ভারত সরকারের যে অবস্থানই হোক না কেন, আমরা তা মেনে নেব। তবে বিশ্বের যেকোনো স্থানে ধর্মের ভিত্তিতে নির্যাতনের আমরা নিন্দা জানাই এবং কেন্দ্রীয় সরকার ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই বিষয়ে হস্তক্ষেপের আবেদন জানাই।’
বিধানসভায় মমতা প্রস্তাব করেন, ‘প্রধানমন্ত্রী না পারলে বিদেশমন্ত্রী এ বিষয়ে সংসদকে জানান।’
তিনি বলেন, ‘এমন ঘটনা ঘটে চললে, আমাদের লোককে ফিরিয়ে আনতে চাই। একবেলা খাব, দরকারে একটা রুটি ভাগ করে খাব। আমাদের লোক অত্যাচারিত হোক চাই না।’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ভারত সরকার এই বিষয়টি জাতিসংঘের কাছে তুলে ধরতে পারে…যাতে একটি শান্তিরক্ষী বাহিনী বাংলাদেশে পাঠানো যায়। বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে ভারত সরকার পুরোপুরি নীরব’।
বাংলাদেশ বিষয়ে ইসকন নেতাদের সঙ্গে কথা হয়ে জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কলকাতার ইসকন ইউনিটের প্রধানের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন এবং সহানুভূতি ও সমর্থন জানিয়েছেন।
অন্য কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে চান না জানিয়ে মমতা বলেন, যখন বাংলাদেশি জেলেরা ভুলবশত ভারতীয় জলসীমায় প্রবেশ করেছে বা কোনো বাংলাদেশি ট্রলার ডুবে গেছে, তখন তার সরকার তাদের উদ্ধার করেছে এবং ভালোভাবে দেখভাল করেছে।
এদিকে বাংলাদেশের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্যিক সম্পর্ক বন্ধের দাবিতে ভারত-বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থল সীমান্ত পেট্টাপোলে অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে বিজেপি। সোমবার দুপুরের পর পেট্টাপোল এলাকায় বিজেপি সমর্থকরা একত্রিত হতে থাকেন। সেখানে অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। দুপুরের পর সেখানে বক্তব্য রাখবেন বিজেপি নেতা ও রাজ্যটির বিরোধী দলীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারী।
এই ঘটনায় সীমান্তে নিয়োজিত বিএসএফ বাড়তি সর্তকর্তা জারি করেছে। সীমান্তের জিরো পয়েন্টের কাছে কোনও বিক্ষোভকারীদের ঘেষতে দেয়া হচ্ছে না। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী ছাড়াও রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকেও সীমান্ত জুড়ে নেয়া হয়েছে বাড়তি সতর্কাবস্থা।
Leave a Reply