আমিরাতে সাধারণ ক্ষমা পেয়েছেন ৫০ হাজার বাংলাদেশি!

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ রফিকুল আলম জানিয়েছেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৫০ হাজার অবৈধ বাংলাদেশি সাধারণ ক্ষমার সুযোগ নিয়েছেন। এখনও দেশটিতে অবস্থানরত অন‌্য অবৈধ বাংলাদে‌শিদের এ সুযোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাপ্তাহিক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ আহ্বান জানান তিনি।

রফিকুল আলম বলেন, আমিরাত সরকার চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সেখানের অবৈধ প্রবাসী বাংলাদেশিদের সাধারণ ক্ষমার সুযোগ দিয়েছেন। ইতোমধ্যে ৫০ হাজার বাংলাদেশি এই সাধারণ ক্ষমার সুযোগ নিয়েছেন। তবে যারা এখনো এই সুযোগ নেননি তাদের প্রতি সুযোগ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

বাংলাদেশিদের জন্য আমিরাতের ভিসা খোলার বিষয়ে তিনি বলেন, আমিরাত বিভিন্ন সময়ে তাদের ভিসানীতি পরিমার্জন করে থাকে। এটা সম্পূর্ণ তাদের বিষয়। জুলাইয়ের আগে থেকেই আমিরাত বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা নীতি পরিবর্তন করে। জুলাইয়ের পর তাদের ভিসা নীতি আরো কঠিন হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। যদিও আমিরাত সরকার এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলেনি। তবে যেসব ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশিদের ভিসা পেতে সমস্যা হচ্ছে, তা আমিরাত কর্তৃপক্ষের সামনে তুলে ধরা হচ্ছে। তারা বিবেচনা করবেন বা খতিয়ে দেখবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

ভারতীয় ভিসা জ‌টিলতার কার‌ণে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের অনুরোধে দি‌ল্লিতে অবস্থিত ইউরোপের চার দেশের জন‌্য বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের ভিসার বিকল্প ব্যবস্থার কথা জানান ম‌ুখপাত্র। রফিকুল আলম বলেন, ইউরোপের অধিকাংশ দেশের দূতাবাস ভারতে। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ মোট ১৩টি ইউরোপিয়ান দূতাবাস ঢাকায় রয়েছে। উচ্চশিক্ষার জন্য ইউরোপ যেতে ইচ্ছুক বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা অন্যান্য দেশের পাশাপাশি ফিনল্যান্ড, অস্ট্রিয়া, পর্তুগাল, গ্রিস এই চারটি দেশের ভিসার জন্য আবেদন করেছেন।

তি‌নি বলেন, ভারতীয় ভিসা সংক্রান্ত জটিলতার পরিপ্রেক্ষিতে এ বিষয়ে দেশগুলোর নয়াদিল্লির দূতাবাসের সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সরাসরি যোগাযোগ ছাড়াও বাংলাদেশ হাইকমিশন, নয়া দিল্লির মাধ্যমে ফিজিক্যাল এপয়েন্টমেন্টের বিকল্প ব্যবস্থার বিষয়ে অনুরোধ করা হয়েছিল। এ ছাড়া উক্ত দেশসমূহে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসসমূহও সংশ্লিষ্ট পররাষ্ট্র দপ্তরের সঙ্গে বৈঠক করে এ ব্যাপারে কার্যকরী বিকল্প ব্যবস্থার অনুরোধ জানিয়েছে।

রফিকুল আলম বলেন, বারবার অনুরোধের পরও এ দেশসমূহ তাদের অভিবাসন সংশ্লিষ্ট আইনের বরাত দিয়ে নয়া দিল্লিতে অবস্থিত দূতাবাসে সশরীরে উপস্থিতি ব্যতীত অন্য কোনো বিকল্পের বিষয়ে অপারগতা প্রকাশ করে। তবে পূর্ব ইউরোপ ও সিআইএসভুক্ত দেশগুলোর ক্ষেত্রে আমরা ভালো অগ্রগতি দেখতে পেয়েছি।

তিনি জানান, ঢাকায় অবস্থিত মোট ৫১টি দূতাবাসের মধ্যে যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ইতালি, স্পেন, ফ্রান্স, নরওয়ে, সুইজারল্যান্ড, ডেনমার্কসহ মোট ১৩টি ইউরোপের। ইউরোপের বিভিন্ন দেশের দূতাবাস বাংলাদেশে স্থাপনের বিষয়টি একান্তই সেসব দেশের নিজস্ব সিদ্ধান্ত। তবে শিক্ষার্থীসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হওয়া ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মাত্রা বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে সর্বস্তরের আলোচনায় বাংলাদেশে ইউরোপীয় দেশসমূহের দূতাবাস স্থাপনের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে উত্থাপন করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *