আমি কি এমনি এমনি নষ্ট হয়েছি, আমার সবই অল্প বয়সে হয়েছে: মৌসুমী

মৌসুমী চ্যাটার্জি ষাটের দশকের মাঝামাঝি সময়ে ভারতীয় বাংলা সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্র ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন। এরপর বলিউডে পাড়ি জমান। অভিনয় ক্যারিয়ারে ধর্মেন্দ্র, জিতেন্দ্র, বিনোদ খান্না, অমিতাভ বচ্চন, রাজেশ খান্নার মতো তারকাদের সহশিল্পী হিসেবে পেয়েছেন।

সম্প্রতি ‘আড়ি’ নামে একটি বাংলা সিনেমায় অভিনয় করছেন। কলকাতায় সিনেমাটির দৃশ্যধারণের কাজ চলছে। সিনেমাটির শুটিংয়ের জন্য মুম্বাই থেকে কলকাতায় এসেছেন মৌসুমী চ্যাটার্জি। শুটিংয়ের ফাঁকে দীর্ঘ ক্যারিয়ার, ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে কথা বলেছেন এই অভিনেত্রী।

এ প্রসঙ্গে মৌসুমী চ্যাটার্জি বলেন, “আমার সবই অল্প বয়সে হয়েছে। আমি কি এমনি এমনি নষ্ট হয়েছি! ‘বালিকা বধূ’ নিয়ে একটা গল্প বলি। সন্ধ্যা রায়ের জন্য ‘বালিকা বধূ’ ঠিকঠাক হয়েছিল। তরুণ মজুমদার দু’বার বলেছিলেন ‘বন্ধ করে দাও।’ আমি তখন খুবই ছোট। পর্দায় আমাকে কিশোরী দেখানোর জন্য আমাকে বাড়তি প্যাড দিয়ে পেটিকোট পরানো হয়েছিল। প্যাকআপের পর সেখানেই, পরিচালকের সামনে পোশাক খুলতে আরম্ভ করি। ছোট তো, বুঝিনি কিছু। সে সব দেখে তরুণ মজুমদার চিৎকার করে বলে, ‘এই এই ওকে ভিতরে নিয়ে যাও।’ সে কী কাণ্ড! আমি ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে কেঁদে ফেলেছিলাম। আমি তো তখন কিছুই জানি না।”

১৯৬৭ সালে তরুণ মজুমদারের ‘বালিকা বধূ’ সিনেমার মাধ্যমে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে আত্মপ্রকাশ করেন মৌসুমী। পরে বলিউডে যাত্রা করেন। সত্তর দশকে বলিউডের সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়া অভিনেত্রীদের অন্যতম মৌসুমী।

ব্যক্তিগত জীবনে মৌসুমী চ্যাটার্জি জয়ন্ত চ্যাটার্জির সঙ্গে ঘর বেঁধেছেন। সাপ আর স্বামী নিয়ে ভয় এবং মজার একটা ঘটনা বর্ণনা করেন এই আলাপচারিতায়। মৌসুমী বলেন, “বেঙ্গালুরুতে পাহাড়ি অঞ্চলে শুটিংয়ের সময় সাপ বেরিয়েছিল। ঋষি কাপুর, নীতু কাপুরের সঙ্গে শুটিং করছিলাম। হঠাৎ সাপের আগমন! নীতু ভয়ে চুপ। কিন্তু আমি সাপটি ধরে ফেলি। আমার হাতে পেঁচিয়ে ফেলেছিল। আমার বর চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে তোয়ালে পরে বেরিয়ে বলে— ‘এই তুমি সাপ ছাড়ো না হলে ডিভোর্স দেব।’ আমি বলেছিলাম, ‘ডিভোর্স দেবে না কী করবে তা জানি না। আমি বাবা সাপ ছাড়ব না, না হলে মারা পড়ব।”

৫৭ বছরের অভিনয় ক্যারিয়ারে অসংখ্য দর্শকপ্রিয় সিনেমা উপহার দিয়েছেন মৌসুমী চ্যাটার্জি। এ তালিকায় রয়েছে— অনুরাগ, বেনাম, মঞ্জিল, প্রেম বন্ধন প্রভৃতি। কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ এ অভিনেত্রী পেয়েছেন দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *