জবি ছাত্রদলের কমিটি বাতিলের দাবি, যা বললেন ছাত্রদল সম্পাদক!

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদ্য ঘোষিত আহ্বায়ক কমিটিকে বিলুপ্ত ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১তম ব্যাচের (২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষ) ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তারা।

সংবাদ সম্মেলনে নেতাকর্মীরা বলেন, মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পরে সিনিয়র থেকে জুনিয়র পর্যায়ের সব ত্যাগী ও হামলা-মামলার শিকার নেতাকর্মীদের পদবঞ্চিত করে অছাত্র, ছাত্রলীগের কর্মীদের দ্বারা এবং বিপ্লবোত্তর সময়ে রাজনীতিতে আসা হাইব্রিডদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়ছে।

তারা আরো বলেন, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন ও লড়াই-সংগ্রাম অব্যাহত রেখে যারা জীবন বাজি রেখেছেন তাদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে।

বিশেষ করে ১১তম ব্যাচকে (২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষ) ইচ্ছাকৃতভাবে পদবঞ্চিত করা হয়েছে। এভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মাইনাসের রাজনীতি কায়েম করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তারা।

সংবাদ সম্মেলন থেকে অনতিবিলম্বে সদ্য ঘোষিত কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে অংশগ্রহণমূলক, বুদ্ধিভিত্তিক, মেধা ও পরিশ্রমের মূল্যায়নের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠন করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলকে সুসংগঠিত করার দাবি জানিয়েছেন পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা।

সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস শুকুর আইমান, স্বাস্থ্য সম্পাদক মো. রায়হান হোসেন অপু, যোগাযোগবিষয়ক সম্পাদক সাইফ শাহিন, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক ইয়াসির আরাফাত, স্কুলবিষয়ক সম্পাদক তৌহিদ চৌধুরী, সহসাংগঠনিক সম্পাদক সোলাইমান খান সাগর, ছাত্রনেতা ইমরান হোসাইন, বাবলী আক্তার সাথী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, কেউ পদবঞ্চিত হলে বা ক্ষুব্ধ হলে সাংগঠনিক কাঠামোর মধ্যে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট তা উপস্থাপন করতে হবে। কোনোভাবেই দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করা যাবে না। আমরা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছি।

তিনি আরো বলেন, এই কমিটির দায়িত্ব মূলত ৪৫ দিনের মধ্যে বর্তমান শিক্ষার্থীদের হাতে নেতৃত্ব হস্তান্তরের ব্যবস্থা করা।

জবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, সম্মেলন প্রস্তুতির জন্য ছোট আকারের কমিটি হয়েছে। এখানে সবাইকে পদ দেওয়া সম্ভব নয়। যারা পদবঞ্চিত হয়েছে, পরবর্তীতে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তাদের সবাইকে মূল্যায়নের চেষ্টা করা হবে।

হিমেল আরো বলেন, তবে কমিটি ঘোষণা নিয়ে ক্যাস্পাসে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি কোনোভাবেই কাম্য নয়।

এদিকে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এড়িয়ে শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে জবি শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদ।

বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) জবি ছাত্র অধিকার পরিষদ শাখার সভাপতি একে এম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক রায়হান হাসান রাব্বি স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি আমরা লক্ষ করেছি যে, জবি শাখা ছাত্রদলের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে ভীতিকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে যা শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ পুরো ক্যাম্পাসের জন্য উদ্বেগজনক। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হলো, শিক্ষার্থীদের জ্ঞানার্জনের জন্য নিরাপদ ও মনোরম পরিবেশ নিশ্চিত করা। প্রশাসনকে ক্যাম্পাসে শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি জানান তারা।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ২৭ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষের মেহেদী হাসান হিমেলকে আহ্বায়ক ও ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের শামসুল আরেফিনকে সদস্য সচিব করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *