বিসিএস পরীক্ষায় চিকিৎসকদের বয়সসীমা আগের মতো দুই বছর বাড়িয়ে ৩৪ বছর করা না হলে সারা দেশে চিকিৎসা শাটডাউন কর্মসূচির হুমকি দিয়েছেন চিকিৎসকরা। রবিবার (১৯ জানুয়ারি) বিকেল ৪টায় সচিবালয়ের প্রধান ফটকের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তারা এ হুমকি দেন।
এ সময় বক্তারা বলেন, ‘আমরা এরই মধ্যে সব ধরনের টেবিলওয়ার্ক সম্পন্ন করেছি। আমরা চেয়েছি যেন টেবিলেই বিষয়টি সমাধান হয়।
কিন্তু দীর্ঘ এক মাস ধরে টেবিল থেকে টেবিলে ঘুরলেও সমস্যা সমাধানের কার্যকর কোনো উদ্যোগ আমরা দেখছি না। তাই বাধ্য হয়ে রাজপথেই বয়স বৃদ্ধির সমাধান আদায় করতে নেমেছি।’
চিকিৎসক ও চিকিৎসা শিক্ষার্থীদের সংগঠনগুলোর সম্মিলিত সংগঠন ইউনাইটেড মেডিক্যাল অর্গানাইজেশনস্ অব বাংলাদেশ (ইউমব)-এর চিফ কো-অর্ডিনেটর ডা. মোবারক হোসাইন বলেন, ‘আমাদের কঠোর হতে বাধ্য করবেন না। আমরা এতোদিন চেয়েছি টেবিল ওয়ার্কের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করতে।
কিন্তু সবাই আমাদের সঙ্গে ঐকমত্য পোষণ করলেও অদৃশ্য কারণে সেটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। আমরা আমাদের ঊর্ধ্বতন চিকিৎসকদের সঙ্গে দেখা করেছি, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একাধিকবার গিয়েছি, সবাই বলেছে আমাদের সঙ্গে বৈষম্য করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই না আবারও শাহবাগ অবরোধ হোক, আমরা চাই না চিকিৎসকরা রাজপথে নেমে আসুক। চিকিৎসকরা রাজপথে এলে কর্মবিরতি দিয়ে আসবে।
তখন রোগীদের দুর্ভোগ হলেও আমাদের কিছু করার থাকবে না। আমরা বিষয়টি টেবিলে সমাধান করতে চেয়েছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা সেটি পারিনি। এখন আমরা কর্মবিরতির চিন্তা করছি। বাংলাদেশের চিকিৎসকদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে।
তারাও সারা দেশের চিকিৎসা সেবা শাটডাউন করে আমাদের সঙ্গে রাজপথে নেমে আসবেন।’
ভয়েস অব ডক্টরসের আহ্বায়ক ও জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ডা. মিনহাজুল আবেদীন বলেন, ‘৪৭তম বিসিএসের আবেদন এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। আর মাত্র ১২ দিন আছে। কিন্তু এখনো চিকিৎসকদের সমস্যাটি সমাধান হচ্ছে না। বিসিএসে সবার বয়স বৃদ্ধি করা হলেও চিকিৎসকদের বৃদ্ধি করা হয়নি। এক আমাদের সঙ্গে এটা বড় ধরনের বৈষম্য। আমরা সব সময় দেখি সব বৈষম্য চিকিৎসকদের সঙ্গেই করা হয়। এর কারণ আমরা জানি না ‘
এ সময় বাংলাদেশ মেডিক্যাল কমিউনিটির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ডা. রায়হান আসার বলেন, ‘আমরা জানি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে শাটডাউন দিলে রোগীরা কষ্ট পায়। আমরা তাই কর্মসূচিতে যেতে চাই না। কিন্তু আমরা আমাদের ঊর্ধ্বতন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে একাধিকবার গিয়েছি। তারা প্রত্যেকেই আমাদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেছেন। এমনকি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বয়স বৃদ্ধির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে। কিন্তু জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সেটি দীর্ঘ এক মাস ধরে ঝুলিয়ে রেখেছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে চিকিৎসক সমাজ অংশগ্রহণ করেছিল। আমরা তো কোনো বৈষম্য টিকিয়ে রাখার জন্য আন্দোলন করিনি।’
মানববন্ধনে আরো বক্তব্য দেন চিকিৎসক ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ডা. মাহফুজুল হক চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. মঈন উদ্দিন চিশতি প্রমুখ।
Leave a Reply