ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই ১৮ হাজার ভারতীয়কে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে তাড়াচ্ছেন ট্রাম্প!

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি এবং বাণিজ্যিক সংঘাত এড়ানোর লক্ষ্যে ভারত সরকার তার নাগরিকদের অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত অবস্থায় চিহ্নিত করতে এবং তাদের দেশে ফেরত পাঠাতে প্রস্তুত।

সূত্রমতে, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ উদ্যোগে প্রায় ১৮ হাজার অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীকে দেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে, এই সংখ্যা প্রকৃতপক্ষে আরও বেশি হতে পারে, কারণ পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যায়নি কতজন ভারতীয় অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন।

এটি একপ্রকার ভারতের উদ্যোগ, যাতে আগামী দিনগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ না হয় এবং বাণিজ্যিক সংঘাত এড়ানো যায়। অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের কঠোর অবস্থান একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল। তার শপথ গ্রহণের পরই ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্তে সেনা মোতায়েন এবং জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিল করার উদ্যোগ নেন।

ভারত আশা করছে, অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর এই পদক্ষেপের বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র ভারতীয় নাগরিকদের বৈধ অভিবাসনের সুযোগ রক্ষা করবে। বিশেষত, ছাত্র ভিসা এবং H-1B কর্মী ভিসার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পথ বন্ধ না করতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনকে উৎসাহিত করতে চাইছে ভারত। ২০২৩ সালে প্রায় ৩ লক্ষ ৮৬ হাজার H-1B ভিসার মধ্যে প্রায় তিন-চতুর্থাংশই ভারতীয় নাগরিকদের জন্য বরাদ্দ হয়েছিল।

গত কয়েক বছরে, ভারত বিভিন্ন দেশের সঙ্গে শ্রম ও অভিবাসন চুক্তি করেছে, যার মধ্যে রয়েছে তাইওয়ান, সৌদি আরব, জাপান, ইসরায়েল প্রভৃতি দেশ। ভারতের সরকারের মতে, অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া না হলে, এটি অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গে ভারতের শ্রম ও অভিবাসন চুক্তির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জৈস্বাল জানিয়েছেন, “ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতার অংশ হিসেবে, উভয় পক্ষ অবৈধ অভিবাসন রোধে কাজ করছে। এর মাধ্যমে বৈধ অভিবাসনের জন্য নতুন পথ তৈরি হবে।”

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ভারতে অবৈধভাবে প্রবেশের সংখ্যা ৩ শতাংশ হলেও, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে উত্তর সীমান্তে ভারতীয়দের অবৈধ প্রবেশের সংখ্যা অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি। ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আনুমানিক ২ লাখ ২০ হাজার অবৈধ ভারতীয় অভিবাসী বসবাস করছিলেন বলে যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের একটি প্রতিবেদন জানায়।

মোদি সরকার জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতা করে অভিবাসন নীতির উন্নয়নে কাজ করবে এবং এ পদক্ষেপটির মাধ্যমে দেশীয় রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতাও বজায় রাখতে সক্ষম হবে।

এছাড়া, ট্রাম্প প্রশাসনের প্রভাব মোকাবিলা করতে ভারত যেকোনো পরিস্থিতিতেই মার্কিন বাজারে ভারতের ব্যবসায়িক স্বার্থ রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *