পূর্ব আফ্রিকার দেশ কেনিয়ায় কাকের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। কাকের পরিমাণ এত বেড়েছে যে দেশের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। দিকে দিকে কাক নির্মূলের দাবি উঠছে। কাকের এই উপদ্রব থেকে মুক্তি পেতে নানান সময় নানান পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। তবে কাকের বিস্তার ঠেকাতে পারছে না দেশটি। অবশেষে এই অত্যাচার থেকে রেহাই পেতে ১০ লাখ কাক মারার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার। চলতি বছরের শেষদিকে এসব কাক মারার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বন্যপ্রাণি ও সম্প্রদায় পরিষেবার পরিচালক চার্লস মুসিওকি বলেছেন, কেনিয়ার উপকূল অঞ্চলে হোটেল মালিক এবং কৃষকদের জনরোষের কারণে সরকার কাক সমস্যা সমাধানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাক মারতে কেনিয়ার সরকার নিউজিল্যান্ড থেকে স্টারলিসাইড নামক বিষ আমদানির পরিকল্পনা করেছে। এই বিষ পরে হোটেল মালিকদের দেয়া হবে।
পক্ষীবিদ, সংরক্ষণবিদ ও রোচা কেনিয়ার সিইও কলিন জ্যাকসন জানান, ১০ লাখ কাক হত্যা করতে ৫ থেকে ১০ কেজি বিষের দরকার হবে। প্রতি কেজি বিষ কিনতে ব্যয় হবে ছয় হাজার মার্কিন ডলার।
তিনি বলেন, হোটেল থেকে দেয়া মাংসের টুকরোয় বিষ মেশানো হবে। এই মাংস খেলে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টার মধ্যে সব কাক মারা যাবে। তবে এই বিষ অন্য প্রজাতির পাখির জন্য কোনো ঝুঁকি তৈরি করবে না।
কেন এত কাক হত্যা করা হচ্ছে
কলিন জ্যাকসন বলেন, এসব কাক খুবই আক্রমণাত্মক। এরা বিপন্ন প্রজাতির স্থানীয় পাখির শিকার করে ফেলে। তাদের বাসা ধ্বংস করে এবং ডিম ও ছানা নিয়ে যায়। যার ফলে স্থানীয় পাখির সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।
কেনিয়ার অর্থনীতি অনেকটা পর্যটন নির্ভর। এই পর্যটন খাত থেকে বৈদশিক মুদ্রার বড় একটা অংশ আসে। তবে কাকেরা বেড়াতে আসা পর্যটকদেরও ছাড় দেয় না। তাদের থালা থেকে খাবার কেড়ে নেয় কাক।
এ ছাড়া কাক ছোট প্রাণী, সরীসৃপ ও ছাগলের বাচ্চাদের আক্রমণ করে। মুরগির খামার থেকে বাচ্চা নিয়ে যায়। সেখানকার কৃষিকাজেও ক্ষতি করছে।
তবে কেনিয়ায় কাক মারার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। ২০ বছর আগেও এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল দেশটি। তখন কাকের সংখ্যা কিছুটা কমলেও জনবসতির কাছাকাছি বসবাস হওয়ায় তা আবার বেড়ে যায়।
Leave a Reply