এই রোদ, এই বৃষ্টি! বর্ষা দিনের আবহাওয়াটাই যে এমন। আর এই বৃষ্টি নিয়ে আছে অনেক রোমান্টিসিজম, আবার সেই মুদ্রার উল্টো দিকে রয়েছে তিক্ত স্বাদও। বিশেষ করে যাদের ওপর কাপড় ধোয়া এবং শুকানোর বিশেষ দায়িত্ব পড়েছে।
কেননা, বৃষ্টি কেবল ছাদ বা বারান্দার গাছগুলোকেই নয়, ভিজিয়ে দিচ্ছে দোয়ার পরে শুকাতে দেওয়া কাপড়গুলোকেও। কিন্তু কাপড় তো কাচতেই হবে। কেচে শুকাতেও হবে। উপায় কী? জেনে নিন মেঘের দিনে কাপড় শুকানোর উপায় সম্পর্কে-
> কাপড় পরার আগেই ভাবুন, সেই পোশাকটি ধুয়ে শুকানো ঝামেলা কি না। এমন পোশাক পরুন, সেটি ধোয়ার পর সহজেই শুকিয়ে যায়। জর্জেট, সুতি, ঘের বেশি না এমন টপস, শার্ট, পরুন। যেটা সহজেই কেচে শুকিয়ে আবার পরার জন্য তৈরি করা যাবে।
> কাপড় দীর্ঘ সময় ভেজা থাকলে এর ওপর ফাঙ্গাস জমে। ওদিকে বৃষ্টিতে ভেজা কাপড় ধুয়ে শুকাতে না পারলে তিলা পড়ার ঝুঁকি থাকে। আবার ভেজা কাপড়ে জামা কাটার পোকারাও খুশি হয়, তাদের উপদ্রব বেড়ে যায়। সব মিলিয়ে ভেজা কাপড় শুকানো খুবই জরুরি। সে জন্য কাপড় ধোয়ার পর আগে কিছুক্ষণ ওয়াশরুমের হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে রাখুন। তাতে প্রাথমিকভাবে অতিরিক্ত পানি ঝরে যাবে।
> যে বালতিতে কাপড় ধুয়ে রাখবেন, সেখানে আগে একটা তোয়ালে রাখতে পারেন। তাতে ভেজা কাপড়গুলোর বাড়তি পানি তোয়ালেটা শোষণ করে নেবে। আর অন্য কাপড়গুলোর সঙ্গে তোয়ালেটাও শুকিয়ে নেবেন।
> বর্ষাকে তো আর কাপড় শুকানোর জন্য ঠেকানো যাবে না। ছাদে বা বারান্দায় কাপড় নাড়া যাবে না। তাই ঘরের এমন একটা জায়গায় কাপড় শুকানোর জন্য বেছে নিন, যেখানে মানুষের চলাচল কম। গেস্টরুম খালি থাকলে সেটিকেই সাময়িকভাবে বানিয়ে নিন কাপড় শুকানোর ঘর।
> দড়ি টানিয়ে নিতে পারেন। বাজারে এখন ঘরের ভেতর কাপড় শুকানোর নানা র্যাক পাওয়া যায়। সে রকম একটা কিছু কিনে নিতে পারলে আরো ভালো হয়। কেননা, দড়িতে কাপড় ছড়িয়ে দিলে কাপড়গুলোর এক পাশ অন্য পাশের সঙ্গে লেগে থাকে। ফলে কাপড়ের ভেতরে বাতাস চলাচল হয় কম। ফলে কাপড় শুকাতে দেরি হয়। হ্যাঙ্গারের ভেতর দিয়ে বাতাস চলাচল করায় কাপড় দ্রুত শুকায়।
> কাপড় নেড়ে ফ্যান ছেড়ে দিন। জানলাগুলো খুলে দিন। যে ঘরে ঘুমাবেন, সেখানে কাপড় না শুকানোই ভালো। তাতে অতিরিক্ত আর্দ্রতায় ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে। তা ছাড়া ভেজা কাপড়ের আর্দ্রতা থেকে হতে পারে সর্দি-কাশি। তবে যে ঘরে কাপড় শুকাবেন, সেখানে যদি আপনি বাটিতে খানিক লবণ নিয়ে রেখে দেন, তাহলে সেই লবণটুকু আর্দ্রতা শুষে নেবে। ফলে সহজেই কাপড় শুকিয়ে যাবে।
> কাপড় তুলে নেওয়ার পর ঐ ঘরে একটু দুর্গন্ধ লাগে। সে রকম হলে ধূপ জ্বালিয়ে রেখে দিতে পারেন।
> কাপড় বেশিক্ষণ ভেজা থাকলে সেখানে ফাঙ্গাস জমতে পারে। রোদে জামাকাপড় শুকালে সূর্যের তাপে এই জীবাণু মারা যায়। তবে বর্ষাকালে শুকনা কাপড়, এমনকি হালকা ভেজা কাপড়গুলোকেও ইস্তিরি করে ফেললে ভালো হবে। এতে ছত্রাক জমার সম্ভাবনা থাকবে না। আবার কোঁচকানো ভাবটাও চলে যাবে।
> রোদ না পেলে কাপড়ে একটা আর্দ্র গন্ধ থেকে যেতে পারে। সেটি এড়াতে কাপড় কাচার সময় ডিটারজেন্টের সঙ্গে একটু ভিনেগার বা বেকিং সোডা মিশিয়ে দিতে পারেন। চেষ্টা করুন এমন ডিটারজেন্ট ব্যবহার করতে, যাতে লেবু বা গোলাপের এসেন্স রয়েছে। লিকুইড স্যাভলন ব্যবহারেও বাজে গন্ধ হবে না।
> কাপড় আলমারি বা ওয়ার্ডরোবে রাখার পর মাঝে মাঝে পাল্লা বা দরজা খোলা রাখলে ভালো হবে। কাপড়ের ভাঁজে ভাঁজে দিন ন্যাপথলিন বা নিমের গুঁড়া।
Leave a Reply