রমজান মাসে রোজা রাখার সময় অনেকেই মাথাব্যথায় ভোগেন। এই মাথাব্যথার কারণে অনেক সময় মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাপন বাধাগ্রস্ত হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, রোজায় মাথাব্যথার প্রধান কারণগুলো হলো: পানিশূন্যতা, শরীরে গ্লুকোজের অভাব, অতিরিক্ত ঘুমের অভাব, এবং ক্যাফেইন বা অন্যান্য অভ্যাসের পরিবর্তন।রোজায় মাথাব্যথার কারণ:
পানির অভাব: রোজা রাখার সময় দিনের বেশিরভাগ সময় পানির অভাব ঘটে, যার কারণে শরীরের পানিশূন্যতা তৈরি হতে পারে। এতে মাথাব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
রক্তে শর্করার পরিবর্তন: দীর্ঘ সময় খাবার না খাওয়ার কারণে রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে যেতে পারে, যা মস্তিষ্কের ব্যথা রিসেপ্টরকে প্রভাবিত করে। এর ফলে মাথাব্যথা হতে পারে।
ক্যাফেইন নির্ভরতা: যারা নিয়মিত কফি বা চা পান করেন, তারা রোজা রাখার সময় ক্যাফেইন গ্রহণ না করায় মাথাব্যথায় ভুগতে পারেন।
ঘুমের অভাব: রোজায় সেহরি খাওয়ার পর আবার ঘুমানো অনেকের জন্য একটি অভ্যাস হয়ে দাঁড়ায়। এতে দিনের বেলায় প্রয়োজনীয় ঘুমের অভাব হয়, যা মাথাব্যথার কারণ হতে পারে।
রোজায় মাথাব্যথা কমানোর উপায়:
যতটা সম্ভব পানি পান করুন: ইফতার ও সেহরির মাঝে প্রচুর পানি পান করতে হবে। এতে শরীরের পানির অভাব দূর হবে এবং মাথাব্যথা কমবে।
অলাভজনক ওষুধের ব্যবহার: যারা নিয়মিত মাথাব্যথার ওষুধ খেয়ে থাকেন, তাদের রোজা অবস্থায় নিয়মিতভাবে ওষুধ নিতে হবে, তবে উপবাসের কারণে খালি পেটে ওষুধ না খেয়ে অন্য কোনো পদ্ধতি অনুসরণ করা যেতে পারে।
বরফের প্যাক ব্যবহার করুন: মাথা ও ঘাড়ে বরফের প্যাক লাগানো যেতে পারে। তবে ১৫-২০ মিনিটের বেশি লাগাবেন না। এটি মাথাব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
ধ্যান ও শ্বাস প্রশ্বাস: নিরিবিলি স্থানে বসে ধ্যান করতে পারেন। গাঢ় শ্বাস নিন ও ছাড়ুন, এটি মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করবে এবং মাথাব্যথা কমাতে কার্যকর।
আকুপ্রেশার ব্যবহার: বুড়ো আঙুল ও তর্জনীর ভি স্থান ম্যাসেজ করুন। এটি মাইগ্রেন বা যেকোনো ধরনের মাথাব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে।
পেপারমিন্ট তেল ব্যবহার: কপালে পেপারমিন্ট তেল লাগানো যেতে পারে, এটি মাথাব্যথা কমাতে সাহায্য করে। তেলটি ত্বকে সামান্য জ্বালাপোড়া তৈরি করতে পারে, তবে পরবর্তীতে আরাম পাওয়া যাবে।
বিশ্রাম নিন: চোখ বন্ধ করে একটি শান্ত ও অন্ধকার ঘরে শুয়ে থাকতে পারেন। ঘুমালেও মাথাব্যথা থেকে মুক্তি মিলতে পারে।
এই সব উপায় অনুসরণ করে রোজায় মাথাব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব, তবে যদি সমস্যা তীব্র হয়, তা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
Leave a Reply