অনেকেই প্রস্রাব করার পর ঢিলা বা টিস্যু ব্যবহার করলেও সন্দেহে ভোগেন যে মূত্র ফোঁটা বের হয়েছে কি না। বিশেষ করে নামাজের সময় রুকু বা সিজদায় গেলে এ ধরনের অনুভূতি বেশি হতে পারে। ইসলামের দৃষ্টিতে এই পরিস্থিতিতে কী করণীয়, তা নিয়ে অনেকেই বিভ্রান্তিতে পড়েন।
সমাধান কী?যদি কেউ অজুর পর মূত্র ফোঁটা বের হওয়ার সন্দেহে থাকেন, তাহলে ইসলামের নির্দেশনা হলো—✅ পবিত্রতা নিশ্চিত করার পর লজ্জাস্থানে কিছু পানি ছিটিয়ে নেওয়া।✅ এরপর যদি আর্দ্রতা অনুভূত হয়, তাহলে সেটাকে ছিটানো পানির আর্দ্রতা বলে মনে করা।✅ নামাজের সময় এই ব্যাপারে চিন্তা না করা ও সন্দেহে মনোযোগ না দেওয়া।
বিশ্বস্ত হাদিস ও ফিকহের ব্যাখ্যাইসলামের একজন প্রসিদ্ধ সাহাবী আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.)-কে এক ব্যক্তি এ সমস্যার কথা জানালে তিনি বলেন—”তুমি ওযু করার পর তোমার লজ্জাস্থানে পানি ছিটিয়ে নাও। এরপর যদি আর্দ্রতা অনুভব করো, তাহলে সেটা তোমার ছিটানো পানির আর্দ্রতা বলে মনে করবে।” (মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, বর্ণনা : ৫৮৩)
এছাড়াও, ইসলামী ফিকহগ্রন্থগুলোতে বলা হয়েছে—???? ফাতাওয়া হিন্দিয়া: সন্দেহ বা ওয়াসওয়াসার কারণে অজু বারবার পুনরায় করতে হবে না। (ফাতাওয়া হিন্দিয়া: ১/৯)???? বাদায়িউস সানায়ি: সন্দেহ দূর করার জন্য পবিত্রতা অর্জনের পর আর কোনো পরীক্ষা করা উচিত নয়। (বাদায়িউস সানায়ি: ১/১৪০)
নামাজ ভেঙে যাবে কি?❌ শুধুমাত্র সন্দেহের ভিত্তিতে নামাজ ভেঙে যাবে না।❌ নামাজ চলাকালীন যদি প্রকৃতপক্ষে মূত্র ফোঁটা বের হয়, তাহলে ওযু ভেঙে যাবে এবং নতুন করে ওযু করে নামাজ পড়তে হবে।✅ কিন্তু যদি শুধু সন্দেহ হয়, তাহলে নামাজ চালিয়ে যেতে হবে এবং কোনো রকম পরীক্ষা করার দরকার নেই।
ওয়াসওয়াসার সমাধানবেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটি ওয়াসওয়াসা (সন্দেহ বা অযথা কল্পনা) থেকে হয়ে থাকে। ইসলামে ওয়াসওয়াসা থেকে বাঁচার জন্য নির্দেশনা হলো—???? আল্লাহর ওপর ভরসা করা এবং বারবার ওযু পুনরায় না করা।???? এই ধরনের সন্দেহকে পাত্তা না দেওয়া এবং ইবাদতে মনোযোগ বাড়ানো।???? শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে বাঁচতে কুরআন তেলাওয়াত ও দোয়া করা।
শেষ কথাসুতরাং, যদি অজুর পর মূত্র ফোঁটা বের হওয়ার কেবল সন্দেহ হয়, তাহলে এতে মনোযোগ না দিয়ে স্বাভাবিকভাবে নামাজ চালিয়ে যেতে হবে। অযথা সন্দেহ করে বারবার ওযু করা বা নামাজ বাদ দেওয়া ইসলামের নির্দেশনার বিপরীত। আল্লাহ আমাদের সঠিক বুঝ দান করুন। ????
Leave a Reply