একটি অন্ধকার রাত, এক নিষ্পাপ প্রাণ, আর এক ভয়াবহ ষড়যন্ত্র। আছিয়া জানতেও পারল না, তারই ঘরের মানুষ তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। বোনের মৃত্যু দেখেও কিছু করতে না পারার যন্ত্রণায় কাতর আছিয়ার বোন এখন একটাই দাবি জানাচ্ছেন—দোষীদের এমন শাস্তি হোক, যেন আর কোনো বোনকে এভাবে বিদায় নিতে না হয়।
ঘুমের ওষুধের ফাঁদ, আর তারপর নৃশংসতা
“আমার শাশুড়ি নিশ্চয়ই আমার খাবারে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দিয়েছিল। কারণ আমি কিছুই বুঝতে পারিনি,”—কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন আছিয়ার বোন।
সেদিন রাতেও সবকিছু ছিল স্বাভাবিক। রাত আটটার পর তারা ঘুমিয়ে পড়েন, কিন্তু ফজরের কিছু আগে এক ভয়ংকর দৃশ্যের মুখোমুখি হন তিনি। দরজা খোলা, আর তার বোন নিথর পড়ে আছে মাটিতে।
শেষ মুহূর্তের আর্তনাদ
“আমি বাথরুম থেকে ফিরে দেখি ও পড়ে আছে। তাকে খাটের পাশে রাখলাম। তখনো বুঝিনি কী ভয়াবহ কিছু ঘটে গেছে। কিছুক্ষণ পর ও ব্যথায় কাতরাতে শুরু করে, কাঁদতে কাঁদতে বলল—‘আপু, আমার শরীর জ্বালাপোড়া করছে, অনেক কষ্ট হচ্ছে।’”
প্রথমে ভাবলেন, হয়তো সে পড়ে গিয়ে ব্যথা পেয়েছে। তাকে শান্ত থাকতে বললেন। কিন্তু সকাল হতেই বোঝা গেল, সবকিছুই এক বিভীষিকাময় ষড়যন্ত্রের অংশ।
জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে অসহায় এক বোন
“ওর নিঃশ্বাস ভারী হয়ে যাচ্ছিল, হাত-পা শক্ত হয়ে আসছিল। আমি ওকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘কি হয়েছে?’ ও বলল—‘তারা আমার সাথে এটা করেছে।’ আমি তখনও কিছু বুঝতে পারিনি, কারণ আমাকেও ঘুমের ওষুধ দিয়ে অচেতন করে রাখা হয়েছিল।”
সকালের আলো ফোটার আগেই সব শেষ হয়ে গিয়েছিল। আছিয়ার মুখে তখনো ছিল যন্ত্রণার ছাপ, শরীরে ছিল আঘাতের চিহ্ন। শেষবারের মতো সে বলেছিল—“আপু, আমাকে বাঁচাও!” কিন্তু তখন আর কিছুই করার ছিল না।
পরিবারের ক্ষোভ, ন্যায়বিচারের আহ্বান
আছিয়ার পরিবারের বিশ্বাস, এ ঘটনার পেছনে রয়েছে শ্বশুরবাড়ির ষড়যন্ত্র। তারা চায় এমন কঠোর শাস্তি, যা দেখে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের অপরাধ করার সাহস না পায়।
“আমার বোনের মৃত্যুর জন্য শুধু একজন দায়ী নয়, পুরো শ্বশুরবাড়ির সবাই জড়িত। তাদের কঠোরতম শাস্তি হওয়া উচিত। শুধু ফাঁসি দিলেই এদের অপরাধের সাজা শেষ হবে না!”—বলেন নিহতের বোন।
এই নির্মম ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত শুরু করেছে। আছিয়ার পরিবারের একটাই চাওয়া—এই হত্যাকাণ্ডের বিচার যেন দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে, যেন কোনো মেয়েকে আর এমন করুণ পরিণতির শিকার হতে না হয়।
Leave a Reply