ভয়াবহ হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার কবলে পড়ে নিহত হয়েছেন প্রেসিডেন্ট ইবরাহিম রাইসি। তার সঙ্গে থাকা পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ানসহ অন্যরাও বেঁচে নেই। তারা একটি উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে ফিরছিলেন। সেখানে বক্তব্য দিয়েছিলেন রাইসি।
ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরএনএ জানিয়েছে, আজারবাইজান ও ইরানের মধ্যে একটি জলাধার প্রকল্প উদ্বোধনের পর পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে যাচ্ছিলেন তারা।
ওই উদ্বোধন অনুষ্ঠানে জীবনের শেষ বক্তব্য দেন রাইসি। সেখানে তিনি বলেন, এই মুহূর্তে ইসলামী বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু ফিলিস্তিন। কোনো সন্দেহ নেই যে, আজারবাইজান ও ইরানের জনগণ তাদের ফিলিস্তিনি ভাইদের পাশে রয়েছে। একই সাথে আগ্রাসী ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান দৃঢ়। তবে এ বিষয়ে ইসলামী দেশগুলোর ঘুম ভাঙতে হবে। তাদের উচিত নির্যাতিত ভাইদের জন্য এগিয়ে আসা। অন্যথায় হাতেগোনা দুই একটি দেশ দানবীয় শক্তির বিরুদ্ধে লড়তে পারবে না।
রাইসি আরো বলেন, আজারবাইজানের সাথে আমাদের সম্পর্কটা শুধু প্রতিবেশীর নয়, বরং আত্মীয়তার মতো। দুই দেশের মধ্যকার এই সম্পর্ক এবং সংযোগের ভিত্তি নিহিত আমাদের উভয়ের একক ও অভিন্ন বিশ্বাসের মধ্যে।
আজারবাইজানের সমর্থনে তিনি বলেন, দুটি মুসলিম দেশের মধ্যকার সম্পর্ককে ইরান সবসময়ই গুরুত্বের সাথে দেখেছে। সংঘাতময় নাগর্নো-কারাবাখ যে আজারবাইজানের অংশ, একেবারে প্রথম দিকেই বিষয়টি সমর্থন করেছিল তেহরান। আমাদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বরাবরই এই সমর্থনের কথা উল্লেখ করে এসেছেন। কারণ, আমরা আজারবাইজানের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতায় বিশ্বাস করি।
তিনি বলেন, আরাস করিডোর আমাদের উভয় দেশের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। আশা করছি, নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। ইরান ও আজারবাইজানের জন্য এই করিডোর কৌশলগত একটি রাস্তা। আমরা মনে করি, দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ আরও বাড়াতে এই করিডোর খুবই জরুরি।
আঞ্চলিক এবং আন্তঃআঞ্চলিক সহযোগিতা দৃঢ় করা নিয়ে রাইসি তার পরিকল্পনা পুনঃব্যক্ত করে বলেন, আমরা কেবল ইরান ও আজারবাইজানের মধ্যেই সহযোগিতা অব্যাহত রাখব না। বরং আঞ্চলিক এবং আন্তঃআঞ্চলিক সহযোগিতাও অব্যাহত রাখব। তেহরান ও বাকু যেসব সংস্থার সদস্য সেখানে একে অন্যকে সমর্থন দেওয়ার বিষয়েও ঐকমত্যে পৌঁছেছে। বিশ্ব আজ যেসব সমস্যায় জর্জড়িত, সেগুলো দূরকরণে দুই দেশের এই যৌথ পদক্ষেপ।
Leave a Reply