free tracking

শেখ হাসিনা যাকে ফোন দিয়ে ৩০ মিনিট কেঁদেছিলেন!

আশরাফুজ্জামান মিনহাজ ওরফে মিনহাজ উদ্দিন নিজেকে শুধু মামলা, নিয়োগ ও বদলি বাণিজ্যের অন্যতম শক্তিশালী ব্যক্তি হিসেবেই নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনের লবিস্ট হিসেবেও উপস্থাপন করেন। তিনি দাবি করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থেকে শুরু করে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পর্যন্ত তার ঘনিষ্ঠজন।

সম্প্রতি ফাঁস হওয়া একাধিক ফোনালাপে তার প্রতারণার প্রমাণ উঠে আসে। এরই মধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়লে তিনি গা ঢাকা দেন।

দেশের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে নিজের প্রভাব রয়েছে বলে দাবি করেন মিনহাজ। সোশ্যাল মিডিয়ায় তার প্রোফাইল দেখে অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তি তার প্রতি আকৃষ্ট হন। তিনি দাবি করেন, বিচারপতি থেকে শুরু করে সেনাপ্রধান পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদে কারা বসবেন, তা নির্ধারণে তার ভূমিকা রয়েছে।

একটি পোস্টে তিনি দাবি করেন, ওবায়দুল হাসানকে প্রধান বিচারপতি বানানোর ক্ষেত্রেও তিনি ভূমিকা রেখেছেন।

ফাঁস হওয়া কথোপকথনে মিনহাজ দাবি করেন, শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর তার সুরক্ষার জন্য ভারত তাকে সহায়তা করেছিল। এ সময় শেখ হাসিনা তাকে ব্যক্তিগতভাবে ফোন করে ১০ মিনিট সময় চান।

মিনহাজ বলেন, “আমি তখন ইউকে থেকে ফ্রান্স যাচ্ছিলাম। ঠিক সেই সময় শেখ হাসিনা আমাকে ফোন দিয়ে বললেন, ‘আমি যাচ্ছি, আমার কিছু মেসেজ আছে। তুমি কি শুনতে পারবে?’ আমি তখন এয়ারপোর্টে ছিলাম, তাই বললাম, ‘আমি এখন এয়ারপোর্টে।’ কিন্তু তিনি অনুরোধ করলেন, ‘তুমি আমার জন্য ১০ মিনিট সময় দাও।’

তিনি আরও বলেন, “আমি তার বার্তাগুলো শুনলাম এবং নোট নিলাম। এরপর তিনি বললেন, ‘বাংলাদেশের জন্য কিছু করো, দেশের মানুষের জন্য কিছু করো।’ কথা বলার সময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।”

ফাঁস হওয়া ফোনালাপে উঠে এসেছে, মিনহাজের সঙ্গে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার যোগাযোগ রয়েছে। তিনি দাবি করেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়ার জন্য নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস তাকে অনুরোধ করেছিলেন।

এ ছাড়া ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা রয়েছে বলেও দাবি করেন মিনহাজ। তার ভাষ্যমতে, ভারতের বিভিন্ন সংস্থা তাকে বাংলাদেশ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব দিয়েছে।

মিনহাজ দাবি করেন, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গেও তার বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। এমনকি ট্রাম্পের কিছু নীতিগত সিদ্ধান্তেও তিনি প্রভাব রেখেছেন বলে দাবি করেন।

তিনি বলেন, “ট্রাম্পের প্রথম টুইটটি কে লিখেছিল, সেটা কি বুঝতে পেরেছেন? আমি সেটা পরিচালনা করেছি।”

এছাড়া তিনি দাবি করেন, শেখ হাসিনাকে পুনর্বাসনের জন্য ভারত, ট্রাম্প ও মোদির মধ্যে একটি গোপন বৈঠক হয়েছে, যার ব্যবস্থাপনায় তিনিও যুক্ত ছিলেন।

এসব দাবির সত্যতা কতটুকু, তা যাচাই করা সম্ভব হয়নি। তবে তার বিরুদ্ধে প্রতারণার একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে। পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব জিনিয়া জিন্নাত জানিয়েছেন, আশরাফুজ্জামান মিনহাজ তার স্বামী।

তার এসব দাবির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য একাধিকবার ফোন করা হলেও তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *