অবাক ফুটবলবিশ্ব! এমবাপ্পের ফ্রান্সকে বিদায় করে দিল পুচকে ইয়ামাল!

সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে স্বাগতিক জার্মানিকে হারিয়েই বিশেষ কিছুর আভাস দিয়েছিল স্পেন। সেরা চারেও এবার অনবদ্য পারফর্ম করল দলটি। শুরুতে পিছিয়ে গিয়েও এমবাপ্পের ফ্রান্সকে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে দলটি।

মঙ্গলবার (৯ জুলাই) রাতে মিউনিখের অ্যালিয়াঞ্জ অ্যারেনায় প্রথম সেমিফাইনাল ম্যাচে ফ্রান্সকে ২-১ গোলে হারিয়েছে স্পেন।

দর্শকে ভরপুর অ্যালিয়াঞ্জ অ্যারেনাকে জমিয়ে রাখতে প্রথমার্ধটা ছিল অসাধারণ। আক্রমণে দুই দলই নিজেদের সেরাটা দিয়েছে এসময়। সেমিফাইনালের মঞ্চে প্রথমার্ধের ২৫ মিনিট না পেরোতেই ৩ গোল করেছে দুই দল। আর ঐ ৩ গোলেই নির্ধারিত হয়েছে ম্যাচের ভাগ্য।

দারুণ আত্মবিশ্বাসী স্পেনকে ম্যাচের শুরুতেই চমকে দিয়েছে ফ্রান্স।ম্যাচের অষ্টম মিনিটে কোলো মুয়ানির গোলে লিড পায় দিদিয়ের দেশমের দল। বাম প্রান্তে অ্যাটাক বিল্ডআপে বল পেয়ে যান কিলিয়ান এমবাপ্পে। হেসুস নাভাসকে বিট করে বাড়িয়ে দেন মাপা এক ক্রস। সহজেই মাথা ছুঁইয়ে গোল করেন মুয়ানি।

ম্যাচের ২০ মিনিটে সমতা ফেরান ইয়ামাল। বক্সের বাইরে থেকে দুর্দান্ত এক শটে স্কোরলাইন ১-১ করেন বার্সেলোনার এই তরুণ। এই গোলে ২০ বছর আগের রেকর্ড ভেঙেছেন ইয়ামাল।

১৬ বছর ৩৬২ দিন বয়সে ইউরোপিয়ান ফুটবলের সর্বোচ্চ টুর্নামেন্টে গোল করলেন ইয়ামাল। তার আগে সবচেয়ে কম বয়সে গোল ছিল সুইজারল্যান্ডের জনাথন ভনলাথেনের। ২০০৪ সালে করা তার গোলটিও ছিল ফ্রান্সের বিপক্ষেই।

গোল খাওয়ার পর ফ্রান্সকে সামলে ওঠারও সুযোগ দেয়নি স্পেন। ২৪ মিনিটে হেসুস নাভাসের বাড়ানো বল ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হন ফ্রান্সের ডিফেন্ডাররা, ফাঁকায় বল পেয়ে জালে জড়ান দানি ওলমো। গোল খাওয়ার চার মিনিটের ব্যবধানে লিড নিয়ে নেয় স্পেন।

প্রথমার্ধের শেষদিকে আক্রমণের ধার বারায় ফ্রান্স। কয়েকবার বিপজ্জনক জায়গা থেকে ফ্রি-কিকও পায় তারা। তবে সেসব কাজে লাগাতে পারেননি এমবাপ্পেরা। স্পেনও সুযোগ তৈরি করেছিল। তবে সেসব সুযোগকে পূর্ণতা দিতে পারেনি তারা।

দ্বিতীয়ার্ধে নিজেদের সবটুকু উজাড় করে দিয়েছে ফ্রান্স। গতিময় আক্রমণে স্পেনের রক্ষণকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছিল দলটি। তবে স্প্যানিশদের দেয়াল ভেঙে জালে বল জড়াতে পারেনি তারা।

গোলের জন্য একাই কয়েকটি সুযোগ তৈরি করেছেন এমবাপ্পে। তবে তাতেও কাজ হয়নি। ৫৬ মিনিটে বক্সের বাঁ দিকে দুরূহ কোণ থেকে শট নিয়ে জালের দেখা পাননি এই তারকা। চার মিনিট পর অন্যপাশ দিয়ে আক্রমণে ওঠে ফ্রান্স। তবে এবার ডেম্বেলের জোরালো শট এক হাত দিয়ে ঠেকিয়ে দেন উনাই সিমন।

ম্যাচের শেষদিকে আরও মরিয়া হয়ে ওঠে ফ্রান্স। চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে ভুল করে স্পেন। তবে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি ফ্রান্স। ৭৫ মিনিটে ডি-বক্সে দুই দফায় সুযোগ পেয়েও বিপদমুক্ত করতে পারেনি স্প্যানিশরা। ফাঁকায় বল পেয়ে যান থিও হার্নান্দেজ। কিন্তু উড়িয়ে মেরে দলকে হতাশায় ডোবান এসি মিলান ডিফেন্ডার।

খেলার ধারার বিপরীতে ৮২ মিনিটে একবার জয় নিশ্চিত করে ফেলার সুযোগ পেয়ে গিয়েছিল স্পেন। তবে ইয়ামালের দূর থেকে নেয়া শট বাইরে দিয়ে যায়। ইয়ামালের ওই মিসের একটু পরই ফল বদলে দেওয়ার মোক্ষম সুযোগ পেয়েছিলেন এমবাপ্পে। কিন্তু তার দূর থেকে নেওয়া শট উড়ে যায় আকাশে। আর সেই সঙ্গে শেষ হয়ে যায় ফ্রান্সের পথচলাও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *