free tracking

অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা, শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল ত্যাগের নির্দেশ!

রাজশাহী নার্সিং কলেজ পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বুধবার (১৪ মে) সকালে কলেজের অধ্যক্ষ মোসা. মতিয়ারা খাতুন স্বাক্ষরিত এক নোটিশে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

নোটিশে উল্লেখ করা হয়, ১৩ মে রাজশাহীতে ডিপ্লোমা (সিনিয়র স্টাফ নার্স) ও বিএসসি বেসিক নার্সিং ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত রাজশাহী নার্সিং কলেজের সকল শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

এছাড়া, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে বুধবার (১৪ মে) দুপুর ১২টার মধ্যে সকল শিক্ষার্থীকে আবাসিক হল (হোস্টেল) ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্দেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তবে, এই নির্দেশনায় নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীরা চরম ক্ষুব্ধ। তারা বলেন, আমাদের ওপর হামলা হলো, আমরা আহত ও রক্তাক্ত হলাম। আবার উল্টো আমাদেরকেই শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। আমাদেরকে লেখাপড়া বাদ দিয়ে এখন হল ত্যাগ করতে বলা হচ্ছে। হল ত্যাগ না করলে শাস্তি দেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত অমানবিক।

এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, আগামী ১৬ মে নার্সিং ভর্তি পরীক্ষা। এই পরীক্ষার কেন্দ্র আমাদের রাজশাহী নার্সিং কলেজসহ দেশের বিভিন্ন নার্সিং কলেজ। এই ভর্তি পরীক্ষার একটি বড় বাজেট থাকে, যা প্রত্যেক কলেজের অধ্যক্ষ পেয়ে থাকেন। তিনি মনে করেন, বর্তমান অধ্যক্ষ এই অর্থের লোভে অযৌক্তিকভাবে এই নোটিশ জারি করেছেন, যাতে ক্যাম্পাস শান্ত থাকে এবং ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়।

এ বিষয়ে রাজশাহী নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ মোসা. মতিয়ারা খাতুন বলেন, আগামী ১৬ তারিখ থেকে পরীক্ষা। এই সময় যদি বিশৃঙ্খলা হয়, তাহলে আমি দুটো ট্যাকেল দিতে পারব না। সেজন্য সমন্বয় করে আমি অনির্দিষ্টকালের জন্য কলেজ বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সবকিছু স্বাভাবিক হলে শিক্ষা কার্যক্রম আবারও চালু হবে।

এর আগে, মঙ্গলবার (১৩ মে) দুপুরে রাজশাহী নার্সিং কলেজের ৪ বছর মেয়াদি বেসিক বিএসসি কোর্সের শিক্ষার্থীদের ওপর কলেজ চত্বরে হামলার ঘটনা ঘটে। কলেজের দরজা ও কাঁচ ভাঙচুর করা হয়। এ সময় ১০ জন আহত হন। তারা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে সেখানেও তাদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।

‘বিএসসি স্টুডেন্ট’ শুনলেই পেটানোর ঘোষণা দেন বেসরকারি নার্সিং কলেজের ডিপ্লোমা কোর্সের কয়েকজন শিক্ষার্থী। এ সময় হাসপাতালের ওয়ার্ডের ভেতর থেকে বিএসসির সিনিয়র কয়েকজন শিক্ষার্থীকে টেনে হিঁচড়ে বাইরে এনে হেনস্তা করেন তারা। ‘বড় ভাইয়ের’ নির্দেশে ডিপ্লোমার কয়েকজন শিক্ষার্থী এমনটা করেছেন বলে পরবর্তীতে তারা দাবি করেছেন। এ ঘটনায় হাসপাতাল এলাকা ও ওয়ার্ডের ভেতরেও পুলিশ এবং সেনাবাহিনী কঠোর অবস্থান নেয়। এরপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *