বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে নানা রকম পরিবর্তন আসে, যার একটি ভয়ানক দিক হলো হাড়ক্ষয় বা অস্টিওপোরোসিস। বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা অনেক বেশি দেখা যায়। ৪০ বছর পেরোলেই হাড়ের ক্ষয়ের গতি বাড়তে থাকে, আর মেনোপজের পর এই হার হয়ে পড়ে আরও দ্রুত। এর মূল কারণ শরীরে ইস্ট্রোজেন হরমোনের ঘাটতি, যা হাড়ের ঘনত্ব বজায় রাখতে সহায়তা করে।
ডা. এম ইয়াছিন আলী জানান, ২০ বছর বয়স পর্যন্ত হাড়ের গঠন ও ক্ষয় সমানতালে চললেও বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষয়ের দিকটিই প্রাধান্য পায়। নারীদের ক্ষেত্রে মেনোপজ বা ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়ার পর হাড়ের ক্ষয় দ্রুত বেড়ে যায়। এছাড়াও পর্যাপ্ত ব্যায়ামের অভাব, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন-ডি ঘাটতি, কম ওজন, অতিরিক্ত ধূমপান বা অ্যালকোহল পান করার অভ্যাস, এমনকি দীর্ঘদিন শয্যাশায়ী থাকলেও হাড়ক্ষয়ের ঝুঁকি বাড়ে।
হাড়ক্ষয়ের প্রাথমিক পর্যায়ে কোনো লক্ষণ না থাকলেও পরে দেখা দেয় শরীরব্যাপী ব্যথা, ভারসাম্যহীনতা, সহজে পড়ে যাওয়া এবং হিপ বা কোমরের হাড় ভেঙে যাওয়ার মতো ঘটনা। এতে আত্মবিশ্বাসেও ধাক্কা লাগে।
কীভাবে বুঝবেন আপনি হাড়ক্ষয়ে আক্রান্ত?শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ব্যথা
চলাফেরায় অস্বস্তি
ভারসাম্য হারানো
সহজেই হাড় ভেঙে যাওয়া
প্রতিরোধে যা করবেন:ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন-ডি সমৃদ্ধ খাবার খান (দুধ, দই, কডলিভার অয়েল)
নিয়মিত ব্যায়াম করুন
ধূমপান ও মদ্যপান থেকে বিরত থাকুন
৫০ বছর পেরুলেই হাড়ের ঘনত্ব পরীক্ষা করুন
মাটিতে পড়ে যাওয়ার মতো ঝুঁকি এড়িয়ে চলুন
চিকিৎসা কী?চিকিৎসার লক্ষ্য হলো হাড় শক্তিশালী করা ও ক্ষয় ঠেকানো। প্রয়োজন অনুযায়ী ক্যালসিয়াম, ভিটামিন-ডি, এবং হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি দেয়া হয়। এলেনড্রোনেট, রিসিড্রোনেট, ইবানড্রোনেট জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করা হয় চিকিৎসায়।
চিকিৎসা না করলেই যা হতে পারে:প্রথমে কোনো লক্ষণ না থাকলেও হাড় ফাটলে বা ভেঙে গেলে যন্ত্রণাদায়ক পরিস্থিতি তৈরি হয়। তাই বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিয়মিত পরীক্ষা ও সচেতনতা জরুরি।
???? সুস্থ হাড়ের জন্য আজ থেকেই সতর্ক হোন। হাড়ক্ষয় ঠেকাতে সচেতনতা এবং সময়মতো চিকিৎসাই হতে পারে আপনার রক্ষা-কবচ।
Leave a Reply