প্রশাসনে আবারও বড় ধরনের পদোন্নতির প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। সুপারিয়র সিলেকশন বোর্ড (এসএসবি) ইতোমধ্যে দুই স্তরের পদোন্নতির প্রক্রিয়া চালু করেছে। প্রথম ধাপে সিনিয়র সহকারী সচিব থেকে উপসচিব এবং পরবর্তী ধাপে যুগ্ম সচিব থেকে অতিরিক্ত সচিব পদে রদবদলের সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে সরকার। এতে করে ভাগ্য খুলতে যাচ্ছে প্রশাসনের অন্তত ৫ শতাধিক কর্মকর্তার।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এসএসবি গত ৮ জুলাই মন্ত্রিপরিষদসচিব ড. শেখ আব্দুর রশিদের সভাপতিত্বে এক বৈঠকে বসে। পদোন্নতির জন্য কর্মকর্তাদের চাকরি জীবন, শৃঙ্খলা, দক্ষতা, দুর্নীতির অভিযোগ, ছাত্রজীবনের পরিচিতি ও পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ডসহ সব তথ্য বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি মাসেই উপসচিব পদে পদোন্নতির ঘোষণা আসতে পারে।
এরপর অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতির চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে। প্রাথমিকভাবে ৩০তম বিসিএস ব্যাচের প্রায় আড়াই শতাধিক কর্মকর্তার পদোন্নতির সম্ভাবনা রয়েছে। এই ব্যাচের কর্মকর্তারা ২০১২ সালে প্রশাসনে যোগ দেন এবং ২০২২ সালেই উপসচিব হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেন। যদিও নানা রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক কারণে এখনো সেই পদোন্নতি ঝুলে রয়েছে।
অন্যদিকে, অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে ২০তম বিসিএস ব্যাচকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এই ব্যাচের ২৪৪ জন প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তা ছাড়াও অন্যান্য ক্যাডার থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মকর্তা বিবেচনায় আছেন। সব মিলিয়ে অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতির জন্য প্রায় ৩০০ কর্মকর্তাকে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। তবে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের আমলে যারা জেলা প্রশাসক হিসেবে কাজ করেছেন, তাদের মধ্যে ৪৩ জনকে এই তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হতে পারে।
বর্তমানে অতিরিক্ত সচিবের অনুমোদিত পদ ২১২ হলেও পদে আছেন ৩৭০ জন। যুগ্ম সচিবের অনুমোদিত পদ ৫০২, কিন্তু কর্মরত আছেন ১,০৩৪ জন। উপসচিবের অনুমোদিত পদ ১,৪২০ হলেও বর্তমানে কর্মরত ১,৪০২ জন। অর্থাৎ সব স্তরেই পদের তুলনায় কর্মকর্তার সংখ্যা বেশি। ফলে নতুনভাবে পদোন্নতি পাওয়া অনেক কর্মকর্তাকে আগের পদেই দায়িত্ব পালন করতে হতে পারে।
নিয়ম অনুযায়ী, সিনিয়র সহকারী সচিব হিসেবে পাঁচ বছর পূর্ণ ও অন্তত ১০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকলে উপসচিব পদে পদোন্নতি সম্ভব। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে তথ্য সংগ্রহ করলেও রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারণে তখন পদোন্নতির প্রক্রিয়া স্থগিত হয়। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসে এবং এসএসবি ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে বড় পরিবর্তন ঘটে।
তথ্য বিশ্লেষণ শেষে খুব শিগগিরই নতুন পদোন্নতির তালিকা প্রকাশ হবে বলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা আভাস দিয়েছেন। প্রশাসনের অভ্যন্তরে এই পদোন্নতিকে ইতিবাচক পরিবর্তন হিসেবে দেখা হচ্ছে।সবার আগে সর্বশেষ খবর পেতে sportshour24-এর সাথেই থাকুন।
Leave a Reply