free tracking

ভিটামিন কে-এর অভাবে হতে পারে যে রোগগুলো, সাবধান হোন এখনই!

আমাদের শরীরের সুষ্ঠু কার্যক্রম বজায় রাখতে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন প্রয়োজন হয়। তার মধ্যে ভিটামিন কে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ। রক্ত জমাট বাঁধা, হাড়ের গঠন এবং হৃদ্‌রোগ প্রতিরোধে এই ভিটামিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর অভাব হলে নানা রকম শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে, বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে এটি হতে পারে মারাত্মক।

ভিটামিন কে কেন প্রয়োজনরক্ত জমাট বাঁধা:শরীরে আঘাত বা কাটা-ছেঁড়ার পর রক্তপাত বন্ধ করার জন্য কিছু প্রোটিন সক্রিয় হয়, যেগুলোর কার্যকারিতার জন্য ভিটামিন কে অপরিহার্য।

হাড়ের গঠন ও স্বাস্থ্য:ভিটামিন কে হাড়ে ক্যালসিয়াম জমা রাখতে সহায়তা করে। এটি অস্টিওক্যালসিন নামক প্রোটিনকে সক্রিয় করে, যা হাড়কে শক্তিশালী ও টেকসই রাখতে সাহায্য করে।

হৃদ্‌রোগ প্রতিরোধে ভূমিকা:গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন কে ধমনীতে ক্যালসিয়াম জমে যাওয়ার ঝুঁকি কমায়, যা হৃদ্‌রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।

অন্যান্য উপকারিতা:ভিটামিন কে কোলন, পাকস্থলী, প্রোস্টেট, মুখ ও নাকের কিছু ধরনের ক্যান্সার প্রতিরোধেও ভূমিকা রাখতে পারে বলে কিছু গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে। লিভার ক্যান্সার রোগীদের ক্ষেত্রেও এটি উপকারী হতে পারে।

কারা ভিটামিন কে-র ঘাটতির ঝুঁকিতেভিটামিন কে-এর ঘাটতি সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে বিরল। তবে যাদের হজমের সমস্যা রয়েছে, যেমন পিত্তথলির রোগ, অন্ত্রের দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা বা যারা দীর্ঘদিন অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করেন কিংবা অতিরিক্ত অ্যালকোহল গ্রহণ করেন—তাদের মধ্যে এ ঘাটতি দেখা দিতে পারে।

ভিটামিন কে-র অভাবে যেসব সমস্যা হতে পারেঘা শুকাতে দেরি হওয়া বা রক্তপাত থামতে সময় লাগা

নাক, মুখ বা দাঁতের মাড়ি থেকে রক্ত পড়া

অতিরিক্ত ঋতুস্রাব

হাড় দুর্বল হয়ে যাওয়া বা সহজেই ভেঙে যাওয়া

শিশুদের ক্ষেত্রে ইনট্রাক্রেনিয়াল ব্লিডিং বা মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ

কিছু ক্ষেত্রে হাড়ের ব্যথা, পেশি দুর্বলতা ও অতিরিক্ত ক্লান্তি

নবজাতকদের জন্য ভিটামিন কে কেন জরুরিনবজাতক শিশুরা জন্মের সময় স্বাভাবিকভাবেই ভিটামিন কে-এর ঘাটিতে থাকে। এ কারণে অনেক দেশে জন্মের পরপরই শিশুকে ভিটামিন কে ইনজেকশন দেওয়া হয়, যাতে ‘নিউবর্ন হেমোরেজ ডিজঅর্ডার’ বা রক্তক্ষরণজনিত রোগ প্রতিরোধ করা যায়। বুকের দুধে পর্যাপ্ত ভিটামিন কে না থাকায় শুধুমাত্র দুধ খাওয়া শিশুদের ক্ষেত্রে এই ঘাটতির ঝুঁকি বেশি থাকে।

কীভাবে ভিটামিন কে নিশ্চিত করবেনখাদ্যতালিকায় প্রতিদিন সবুজ শাকসবজি (যেমন পালং শাক, কলমি শাক, বাঁধাকপি) রাখা উচিত

প্রতিদিন অন্তত এক কাপ ভাপে সিদ্ধ বা হালকা রান্না করা শাক খাওয়ার অভ্যাস

যাদের হজমে সমস্যা আছে, তারা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করতে পারেন

শিশুদের জন্মের পর হাসপাতাল থেকে দেওয়া ভিটামিন কে ইনজেকশন গ্রহণ নিশ্চিত করা উচিতভিটামিন কে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। তাই খাদ্যাভ্যাসে সচেতনতা, শিশুদের জন্য প্রাথমিক চিকিৎসা ও প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের মাধ্যমে এর ঘাটতি সহজেই প্রতিরোধ করা সম্ভব। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের অংশ হিসেবে ভিটামিন কে-র গুরুত্ব সবাইকে বুঝতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *