মানুষ সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব। জান্নাত থেকে দুনিয়াতে আমাদেরকে প্রেরণ করেছেন, একজন মুমিনের জন্য এ ধরার সফর শেষে চিরস্থায়ী সুখশান্তির বন্দোবস্ত হবে জান্নাত। আধুনিকতার ছোঁয়া আমাদের প্রতিটা মূহুর্ত হয়ে উঠছে ভয়ংকর! আমাদের দৈনন্দিন এমন অনেক কাজকর্ম রয়েছে যা আমাদের কাছে সুন্দরের প্রতিক বা মর্ডান হলেও ইসলাম এসব বিষয়ে দিয়েছে কঠিন হুঁশিয়ারি! চলুন জানি যে পাঁচ শ্রেণীর মানুষ জান্নাতের ঘ্রাণও পাবেনা।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন; জাহান্নামে দু’ধরনের লোক এমন আছে যাদের আমি (এখনো) দেখতে পাইনি। একদল লোক, যাদের সাথে গরুর লেজের ন্যায় চাবুক থাকবে, তা দিয়ে তারা লোকজনকে পিটাবে। আর এক দল স্ত্রীলোক, যারা বস্ত্র পরিহিত হয়েও বিবস্ত্র, (সুখ সম্পদ ভোগকারিনী হয়েও অকৃতজ্ঞ) যারা অন্যদের আকর্ষণকারী ও আকৃষ্ট করবে, তাদের মাথার চুলের অবস্থা উটের হেলে পড়া কুঁজের ন্যায়। ওরা জান্নাতে প্রবেশ করবে না। (সহিহ মুসলিম-৫৩৯৭)
তালাকপ্রার্থী নারী
সংসার করতে গিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সাময়িক মনোমালিন্য, কথাকাটাকাটি ও মান-অভিমান হওয়া স্বাভাবিক। ছোটখাটো ঝক্কিঝামেলা হওয়াও অস্বাভাবিক নয়। এসব তুচ্ছ বিষয়ের ধরুন সংসার ভেঙে দেওয়া কোনোক্রমেই বুদ্ধিমানের কাজ নয়। কিন্তু কিছু নারী এমন রয়েছে, যারা পান থেকে চুন খসলেই স্বামীকে তুই-তুকারি করতে শুরু করে দেয়। কথায় কথায় স্বামীর কাছে তালাক চাইতে থাকে। সাধারণ বিষয়কে কেন্দ্র করে তালাক কামনা করা কোনোক্রমেই কাম্য নয়। যেসব নারী অকারণে স্বামীর কাছে তালাক প্রার্থনা করে তারা জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না। (আবু দাউদ-২২২০)
নিরাপত্তা চুক্তিকারী হত্যাকারী
কোনো অমুসলিম নাগরিক যদি ইসলামি রাষ্ট্রে ট্যাক্স দানের মাধ্যমে নিজের জানমালের নিরাপত্তা লাভের চুক্তিতে আবদ্ধ হয়, তা হলে সে মুসলমানদের মতোই নিরাপত্তার সঙ্গে জীবনযাপন করার অধিকার লাভকরে। এমন অমুসলিম নাগরিককে হত্যা করা চরম অন্যায়। যদি কোনো মুসলমান চুক্তিবদ্ধ ব্যক্তিকে হত্যা করে, তাহলে সে জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না। সহিহ মুসলিম-২৯৪২
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী বলেন, যে ব্যক্তি কোন জিম্মীকে হত্যা করে, সে জান্নাতের ঘ্রাণ পাবে না। আর জান্নাতের ঘ্রাণ চল্লিশ বছরের দূরত্ব থেকে পাওয়া যাবে। (ইবনে মাজাহ-২৬৮৭)
পিতাকে অস্বীকারকারী
পিতা আল্লাহ তাআলার অনেক বড় নেয়ামত। এই পৃথিবীতে যত মানুষ আগমন করেছে তাদের আগমনের মাধ্যম হলো পিতা। তাই পিতৃত্ব একটি মর্যাদাপূর্ণ পদ। প্রতিটি পিতাই নিজের পিতৃত্বের মর্যাদা পেতে চায়। কিন্তু বহু হতভাগা লোক এমন রয়েছে, যারা নিজের পিতাকে মর্যাদা দিতে চায় না।
সমাজে এমন কিছু লোক পাওয়াও বিচিত্র নয়, যারা আপন জন্মদাতার পিতৃপরিচয় অস্বীকার করে অন্যকে পিতা বলে ডাকে! এমন হতভাগ্য লোকের ব্যাপারে হাদিস শরিফে কঠোর হুঁশিয়ারবাণী উচ্চারণ করা হয়েছে। যারা নিজের জন্মদাতা পিতার পিতৃপরিচয় গোপন করে অন্যকে পিতা বলে ডাকে তারা জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না মর্মে সতর্ক করা হয়েছে। (ইবনে মাজাহ-২৬১১)
কালো খেজাব ব্যবহারকারী
বার্ধক্যের কারণে চুল দাড়ি পেকে গেলে তাতে কালো খেজাব ব্যবহার করা নাজায়েজ। এভাবে খেজাব ব্যবহার করার মাধ্যমে সাধারণত মানুষকে নিজের বয়স সম্পর্কে ধোঁকা দেওয়া হয়। বার্ধক্যের কারণে চুল-দাড়ি পাকার পর যারা নিজেদের বয়স লুকানোর জন্য খেজাব ব্যবহার করে তাদের ব্যাপারে হাদিস শরিফে কঠোর সতর্কবাণী উচ্চারণ করা হয়েছে। কালো খেজাব ব্যবহার করে নিজের বয়স লুকিয়ে ধোঁকাদানকারীদের ব্যাপারে হাদিসে এসেছে, তারা জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না। (আবু দাউদ-৪২১২)
Leave a Reply