শেরপুরের শ্রীবর্দী উপজেলার খোলাসপুর মধ্যপাড়া এলাকার এক বৃদ্ধ দম্পতির উপর নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি করেছে। ভিডিওতে বৃদ্ধ স্বামী অসুস্থ স্ত্রীকে উঠানে খোলা মাটিতে পুঁতে ফেলার চেষ্টা করেন। তবে স্থানীয়দের অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঘটনাটি সম্পূর্ণ অন্যরকম।
স্থানীয়রা জানায়, প্রায় ১০ বছর ধরে অসুস্থ স্ত্রী খোরশেদা বেগমের সেবা করে আসছেন খলিলুর রহমান। সম্প্রতি পক্ষাঘাতগ্রস্ত স্ত্রীর চলাচলের সুবিধার জন্য প্লাস্টিকের কোমর চেয়ারও কিনে এনেছেন তিনি। ভিডিওর দিনে সেই চেয়ার ব্যবহারের জন্য উঠানে গর্ত কাটা হচ্ছিল। ওই সময় স্ত্রীর স্বাভাবিক কাজের জন্য ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি তাকে গর্তের কাছে টেনে নিয়ে যান। এই ঘটনাটিই মোবাইলে ধারণ করেন তাদের নাতি খোকন মিয়া, যিনি ভিডিওটি সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে ভাইরাল করে দেন।
খলিলুর রহমান ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, “আমার মানসিক সমস্যা থাকতে পারে, আমি কখনো কাউকে মারিনি। এটি আমার নাতির ইচ্ছায় বড় করে তোলা হয়েছে।”
স্থানীয়রা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে খলিলুর তার স্ত্রীর যত্ন নিচ্ছেন এবং এরকম ঘটনা আগে ঘটেনি। বৃদ্ধ দম্পতির ওপর পারিপার্শ্বিক চাপের কারণে মানসিক ভারসাম্যহীনতার সম্ভাবনাও রয়েছে।
এদিকে, স্থানীয় প্রশাসন এই দম্পতিকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠানোর বিষয়টি বিবেচনা করছে। তারা জানান, “বৃদ্ধাশ্রমে রাখা হলে দম্পতি একটি সম্মানজনক, পরিচ্ছন্ন ও সুস্থ জীবন যাপন করতে পারবেন।”
বৃদ্ধ দম্পতির তিন সন্তান রয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই প্রবাসে আছেন এবং এক মেয়ে অন্ধ হয়ে রাজধানীতে ভিক্ষাবৃত্তি করছেন।
ঘটনাটি সামাজিক ও পারিবারিক সংকটের দিক তুলে ধরে, যেখানে বৃদ্ধ ও অসুস্থদের প্রতি সম্মান ও সুরক্ষার গুরুত্ব পুনরায় আলোচিত হচ্ছে।
Leave a Reply