বাংলাদেশ থেকে ইতালি যেতে আগ্রহীদের জন্য এসেছে সুসংবাদ। দীর্ঘসূত্রতার কারণে আটকে থাকা অমীমাংসিত ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া দ্রুত করার পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। সোমবার (১১ আগস্ট) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
৮ বছর পর সুযোগের দ্বার খুলে যায়ইতালি সরকার ‘ফ্লুসি ডিক্রি’ কর্মসূচির আওতায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশ থেকে মৌসুমি ও অ-মৌসুমি খাতে কর্মী নিয়োগ করে থাকে। দীর্ঘ ৮ বছর বন্ধ থাকার পর ২০২২ সালে বাংলাদেশ আবারও এই কর্মসূচির আওতায় আসে। এর ফলে নতুন করে মৌসুমি কাজে অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়ে ঢাকাস্থ ইতালীয় দূতাবাসে ভিসা আবেদনকারীর সংখ্যা হঠাৎ বেড়ে যায়।
ভিসা প্রক্রিয়ার গতি বাড়াতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টাপররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইতালীয় দূতাবাসে মুলতবি থাকা ‘নুলা ওস্তা’ তথা ওয়ার্ক পারমিট দ্রুত নিষ্পত্তির বিষয়ে দুই দেশই গুরুত্ব দিচ্ছে।
এ বছরের মে মাসের শুরুতে ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও পিয়ান্তেদোসির বাংলাদেশ সফরে এই বিষয়টি জোরালোভাবে তোলা হয়। তিনি ভিসা আবেদন প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতা নিরসনে প্রতিশ্রুতি দেন।
নতুন আইনে সাময়িক জটিলতা২০২৪ সালে ইতালি সরকার ‘ল ডিক্রি নং-১৪৫’ জারি করে, যার অধীনে ২২ অক্টোবর ২০২৪-এর পূর্বে ইস্যুকৃত সব ওয়ার্ক পারমিট স্থগিত হয়। এই সিদ্ধান্তের ফলে ঢাকাস্থ ইতালীয় দূতাবাসকে প্রাদেশিক কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া ভিসা অনুমোদন বা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয় না। ফলে যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ হয়ে পড়ে।
তারপরও ইতালীয় দূতাবাস প্রায় ৪০ হাজার মুলতবি আবেদনের মধ্যে ৮ হাজারের বেশি নিষ্পত্তি করেছে। আরও প্রায় ২০ হাজার আবেদন শীঘ্রই প্রক্রিয়াকরণের আওতায় আসবে।
সাম্প্রতিক অগ্রগতি২০২৪ সালের ২২ অক্টোবরের পর ইস্যুকৃত ওয়ার্ক পারমিটে কোনো স্থগিতাদেশ নেই। ফলে ২০২৫ সালের ফ্লুসি ডিক্রির আওতায় আবেদন করা কয়েক শত বাংলাদেশি ইতিমধ্যে ভিসা পেয়েছেন, এবং আগামী মাসগুলোতে আরও অনেকে পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
অসাধু চক্র থেকে সাবধান থাকার আহ্বানবিজ্ঞপ্তিতে সতর্ক করা হয়, ইতালিতে অভিবাসনের জন্য শুধুমাত্র সরকারি কনস্যুলার ও প্রশাসনিক ফি প্রদানের প্রয়োজন। অসাধু চক্রকে লাখ লাখ টাকা দিলে ভিসা বাতিল হওয়ার পাশাপাশি আইনি জটিলতায় পড়ার ঝুঁকি রয়েছে। জাল কাগজপত্র জমা পড়ায় অনেকের ভিসা প্রক্রিয়ায় বিলম্ব ঘটছে এবং ইতালিতে একাধিক ফৌজদারি তদন্ত চলছে।
দক্ষ কর্মী প্রেরণে চুক্তিগত ৬ মে ২০২৫ বাংলাদেশ ও ইতালির মধ্যে অভিবাসন সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর মাধ্যমে বৈধ উপায়ে দক্ষ কর্মী প্রেরণ ও অনিয়মিত অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের সুযোগ তৈরি হয়েছে।
সহযোগিতার আহ্বানপররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, যেকোনো নেতিবাচক প্রচার ইতালি সরকারের বিরূপ মনোভাব তৈরি করতে পারে, যা বর্তমান ও ভবিষ্যতের কর্মী নিয়োগের সম্ভাবনায় প্রভাব ফেলতে পারে। তাই ধৈর্য ও সহযোগিতা প্রদানের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
Leave a Reply