সন্তানের সঙ্গে মা-বাবার সম্পর্ক সবসমই মধুর। তবে একজন মেয়ে ও বাবার মধ্যকার সম্পর্ক শুধুই মধুর নয়, বিশেষ ও অনন্য। এই সম্পর্ক ভালোবাসা, বিশ্বাস ও আত্মীয়তার সঙ্গে পরিপূর্ণ। মেয়ে বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাবার সঙ্গে এই সম্পর্ক আরও দৃঢ় হওয়া উচিত। কিন্তু মেয়ের বয়স যখন ১৫ থেকে ১৮ বছরে এসে পৌঁছায়, তখন শারীরিক ও মানসিকভাবে অনেক পরিবর্তন এসে থাকে। ঠিক এই সময় একটি মেয়ের তার বাবার ভালোবাসা, স্নেহ ও সমর্থনের প্রয়োজন হয়।
একটি মেয়ে যখন ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সে আসে, তখন তার বাবা যদি পাশে দাঁড়ায়, তাহলে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে যেকোনো সমস্যা মোকাবিলা করার সক্ষমতা রাখে ওই মেয়ে। ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মেয়ে যদি এই বয়সের হয়, তবে বাবার ছোট ছোট কিছু পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। সেসব ব্যাপারে জেনে নেয়া যাক।
১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সে অনেক প্রশ্ন জাগে মেয়েদের মনে। একইসঙ্গে আবেগে ভরপুর থাকে তারা। এ পরিস্থিতিতে একজন বাবার উচিত, তার মেয়ের সঙ্গে প্রতিটি ব্যাপারে খোলামেলা কথা বলা। মেয়ে কী বলছে তা মনোযোগ সহকারে শুনতে হবে এবং সেসব বিচার না করে তার অনুভূতি বোঝার চেষ্টা করুন। মেয়ে যখন মনে করবে, তার বাবা তার কথা শোনেন এবং তাকে বোঝেন, তখন সে তার চিন্তাভাবনা আরও খোলামেলাভাবে ভাগ করে নেবেন। এতে বাবা ও মেয়ের মধ্যে সম্পর্কের আস্থা ও গভীরতা বৃদ্ধি পায়।
বাবা হয়ে মেয়েকে অনুপ্রাণিত করা উচিত। বেড়ে উঠা মেয়েকে তার স্বপ্ন পূরণে উৎসাহিত করুন। তাকে বলুন, সে ভালো যেকোনো কাজই করতে পারে। আর বাবার মেয়ের প্রতি এই বিশ্বাস, তার আত্মবিশ্বাস কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেবে। তার চিন্তাভাবনাও ইতিবাচক হবে এবং যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকবে সে। এ ক্ষেত্রে মেয়ের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধিতে বাবার সহায়তা প্রয়োজন।
মেয়েকে বিভিন্নভাবে বাবা বোঝাতে পারেন যে, তার মেয়ে কতটা বিশেষ এবং তার মধ্যে কী পরিমাণ সম্ভাবনা রয়েছে। মেয়ের প্রতি বাবার ভরসা দেখানো মেয়ের যেমন আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পায়, একইসঙ্গে তার সাহসও দৃঢ় হয়।
মনে রাখবেন, একজন আত্মবিশ্বাসী মেয়ে যেকোনো পরিস্থিতিতে নিজের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে। আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জীবন এগিয়ে নিতে পারে। বাবার দায়িত্ব মেয়ের নিরাপত্তার পরিপূর্ণ খেয়াল রাখা। মেয়ে যেন সবসময় নিরাপদ বোধ করে, সেটি বজায় রাখা বাবার দায়িত্ব। ফলে মেয়ে কাউকে বা কোনো কিছু ভয় না পেয়ে জীবনে এগিয়ে চলার সাহস পাবে।
মেয়ের কাছে একজন আদর্শ বাবা হওয়ার জন্য যা কিছু প্রয়োজন, সবই করতে হবে আপনাকে। মেয়ের কাছে ইতিবাচক উদাহরণ হয়ে উঠুন। আপনার আচরণের মাধ্যমে মেয়েকে শেখান, কীভাবে একজন ভালো মানুষ হতে হয়। এতে আপনার মেয়ে জীবনে সঠিক মূল্যবোধ গ্রহণ করবে এবং ভালো মানুষ হয়ে জীবনে দীর্ঘপথ এগিয়ে যেতে পারবে।
Leave a Reply