কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনাকে এক করে দেখবেন না। মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশকে শেখ হাসিনার সঙ্গে গুলিয়ে ফেলবেন না।”
শনিবার বিকেলে টাঙ্গাইলের ঘাটাইলের মাকড়াই এলাকায় ‘মাকড়াই দিবস’ উপলক্ষে কাদেরিয়া বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধা মহাসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
১৯৭১ সালের ১৬ আগস্ট ঘাটাইলের মাকড়াইয়ে পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন কাদের সিদ্দিকী। সেই স্মরণে প্রতি বছর ‘মাকড়াই দিবস’ পালন করা হয়।
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ করে কাদের সিদ্দিকী বলেন,“আপনাকে একসময় খুব সম্মান করতাম। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর বাড়ি ভেঙেছে আর আপনি দেখেছেন—এটা সহ্য করতে পারছি না। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন না হলে আপনার পরিণতি শেখ হাসিনার চাইতেও ভয়াবহ হবে।”
তিনি সতর্ক করে বলেন, “যারা বঙ্গবন্ধুর বাড়ি ভেঙেছে, মনে রাখবেন, আপনাদেরও বাড়ি, কবর, স্মৃতিসৌধ আছে—সবই হিসাবের আওতায় আসবে।”
গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে কাদের সিদ্দিকী বলেন,“আপনার বিরুদ্ধে যখন সবাই, আমি তখন পাশে দাঁড়িয়েছিলাম। না দাঁড়ালে অর্ধেক গ্রামীণ ব্যাংক ধ্বংস হয়ে যেত।”
এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম–এর উদ্দেশে কাদের সিদ্দিকী বলেন, “কে একজন বলেছেন, বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা নন। বঙ্গবন্ধু না হলে আপনার পিতা কে? সন্তানের পিতা না থাকলে সে কুলাঙ্গার হয়।”
তিনি আরও বলেন, “শেখ হাসিনার পতন হয়েছে আল্লাহর ইচ্ছায়। কিন্তু তাঁকে অন্যায়ভাবে দমন করলে আমি তা হতে দেব না। আইন অনুযায়ী বিচার করুন, আমি মাথা পেতে নেব।”
মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান করার বিষয়ে কাদের সিদ্দিকী বলেন,“যাঁরা মুক্তিযোদ্ধাদের গলায় জুতার মালা দিয়েছেন, আমি তাদের গলায় লক্ষ মানুষের সামনে জুতার চেয়েও নিচু কিছু পরিয়ে দেব। মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান করলে বাংলাদেশ মাফ করবে না।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশ নিয়ে খেলবেন না। স্বাধীনতা নিয়ে ব্যঙ্গ করবেন না। বাংলাদেশ কোনো খেলার পুতুল নয়। যারা ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার’ স্লোগানে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন—তাদের জন্য বাংলাদেশে কোনো জায়গা থাকবে না।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ফজলুল হক (বীর প্রতীক)।প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী।
এছাড়া বক্তব্য দেন মুক্তিযোদ্ধা নেতা এমদাদুল হক খান, মোফাজ্জল হোসেন, হুমায়ুন বাঙ্গাল, ও ঘাটাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকুর রহমান।
Leave a Reply