free tracking

যেভাবে বুঝবেন ফোনের ক্যামেরা হ্যাক করে গোপনে কেউ আপনাকে দেখছে !

কখনও কি এমন অনুভব করেছেন যে কেউ আপনাকে গোপনে দেখছে। বর্তমান সময়ে সাইবার আক্রমণে এমন ঘটনা কম-বেশি ঘটছে। আপনার ফোনের ক্যামেরাও লক্ষ্য হতে পারে। হ্যাকাররা স্পাইওয়্যার বা রিমোট-অ্যাক্সেস ট্রোজান ইনস্টল করে ফোনের ক্যামেরা চালু করে ভিডিও রেকর্ড করতে পারে। এমনকি ক্যামেরা রোলের মিডিয়া সংগ্রহ সম্ভব। শুনতে ভয় লাগছে, তাই না? তবে সুখবর হলো, অনেক আধুনিক স্মার্টফোনে ক্যামহ্যাকিং প্রতিরোধের জন্য উন্নত সিকিউরিটি থাকে। তবুও সতর্ক হওয়া জরুরি। প্রযুক্তি বিদরা কিছু টিপস দিয়েছেন যা থেকে বুঝবেন ক্যামেরা হ্যাক হয়েছে কিনা। এগুলো হলো:

১. ডেটা ব্যবহার পরীক্ষা করুন

ব্যাকগ্রাউন্ডে চলা অ্যাপস অজান্তে ডেটা ব্যবহার করতে পারে। হ্যাকাররা ম্যালিশিয়াস অ্যাপ ইনস্টল করে তা ব্যাকগ্রাউন্ডে চালাতে পারে, যাতে তারা আপনার কার্যকলাপ মনিটর করতে পারে। যদি ডেটা দ্রুত শেষ হয়ে যায়, অচেনা অ্যাপ এবং পারমিশন চেক করুন।

২. ক্যামেরার আচরণ পরীক্ষা করুন

ক্যামেরা অস্বাভাবিকভাবে কাজ করলে সতর্ক হোন। যেমন—অজানা থার্ড-পার্টি অ্যাপ নিজে নিজে খোলা, ক্যামেরার গ্যালারিতে অজানা ছবি বা ভিডিও থাকা, বা অ্যাপ ক্র্যাশ হওয়া। নতুন অ্যাপ ইনস্টল করার আগে রিভিউ এবং পারমিশন ভালো করে দেখুন।

৩. ক্যামেরা পারমিশন রিভিউ করুন

প্রাইভেসি সেটিংসে সব অ্যাপের ক্যামেরা অ্যাক্সেস দেখুন। অযথা অ্যাক্সেস থাকা অ্যাপের পারমিশন বাতিল করুন এবং অচেনা অ্যাপ মুছে ফেলুন।

৪. ভিডিও কলের পারফরম্যান্স মনিটর করুন

হঠাৎ করে ভিডিও কলের গুণমান খারাপ হলে, যদি ইন্টারনেট সংযোগ, হার্ডওয়্যার বা ডেটা সমস্যা না থাকে, তবে তা হ্যাকারদের হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত হতে পারে।

৫. অদ্ভুত শব্দ শুনুন

কলের সময় অস্বাভাবিক ক্লিক, স্ট্যাটিক বা ক্যামেরার শাটার শব্দ শুনলে সতর্ক হোন। এটি হ্যাকাররা মাইক্রোফোন ব্যবহার করছে বোঝাতে পারে।

৬. লোকেশন পারমিশন চেক করুন

অ্যাপের লোকেশন পারমিশন হ্যাকারদের আপনার অবস্থান ট্র্যাক করার সুযোগ দিতে পারে। অপ্রয়োজনীয় পারমিশন সরিয়ে দিন।

৭. ক্যামেরার লাইট মনিটর করুন

অ্যাক্টিভ না থাকলেও ক্যামেরার লাইট অন থাকা সন্দেহজনক। এটি স্পাইওয়্যার বা ফার্মওয়্যার ত্রুটি নির্দেশ করতে পারে। ক্যামেরা আড়াল করতে স্টিকার বা ক্যাম কভার ব্যবহার করতে পারেন।

৮. নতুন অ্যাপ, ছবি বা ভিডিও চেক করুন

অজানা মিডিয়া বা অচেনা অ্যাপ হ্যাকিংয়ের লক্ষণ হতে পারে। ফোন ধীরে চলে বা স্টোরেজ দ্রুত পূর্ণ হয়, তা স্পাইওয়্যারের ইঙ্গিত।

৯. ব্যাটারি পারফরম্যান্স মূল্যায়ন করুন

ব্যাটারি দ্রুত শেষ হলে সাবধান হতে পারে। কারণ ফোন হ্যাক হলে ম্যালিশিয়াস অ্যাপ ব্যাকগ্রাউন্ডে চলে ফোনের ব্যাটারি দ্রুত শেষ করে দেয়।

১০. স্পাইওয়্যার স্ক্যান চালান

রিয়েল-টাইম স্ক্যান চালিয়ে অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করুন। নরটন ৩৬০ ডিলাক্সের মতো প্রমাণিত সফটওয়্যার ব্যবহার করলে হ্যাকারদের প্রতিরোধ করা সহজ হয়।

১১. ফোনের অতিরিক্ত গরম হওয়া

ব্যাকগ্রাউন্ডে চলা স্পাইওয়্যার ফোনকে গরম এবং ধীর করে তুলতে পারে। অন্যান্য কারণ না থাকলে, স্ক্যান চালানো জরুরি।

ফোন ক্যামেরা সুরক্ষার টিপস

  • ফোন জেলব্রেক বা রুট করবেন না।
  • সন্দেহজনক লিংক এবং অ্যাটাচমেন্ট এড়িয়ে চলুন।
  • প্রাইভেসি সেটিংস শক্তিশালী করুন।
  • শুধু বিশ্বাসযোগ্য উৎস থেকে অ্যাপ ডাউনলোড করুন।
  • অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করুন।

ফোনের ক্যামেরা হ্যাকিং সত্যি শঙ্কার বিষয়। তবে সচেতনতা এবং সতর্ক পদক্ষেপ নেয়ার মাধ্যমে ফোন সুরক্ষিত রাখতে পারেন। সতর্কতা হলেই আপনার ফোনের ক্যামেরা এবং ব্যক্তিগত তথ্য হ্যাকারদের হাত থেকে সুরক্ষিত রাখা সম্ভব। তাই সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ভুল করবেন না।

সূত্র: ইউএসনর্টন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *