ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে শেষমুহূর্তের প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত প্রার্থীরা। এ নির্বাচনে বেশি আলোচনায় ভিপি, জিএস, এজিএসসহ কয়েকটি পদ। ভিপি পদে এবার বৈধ প্রার্থী ছিলেন ৪৪ জন। একজনের প্রার্থিতা বাতিল হওয়ায় এখন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪৩ জন। তবে, এই ৪৩ জনই যে জোর আলোচনায় রয়েছেন তা নয়। আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ছাত্রদল সমর্থিত ভিপিপ্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান, ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের ভিপিপ্রার্থী সাদিক কায়েম, ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য’ প্যানেলের ভিপিপ্রার্থী উমামা ফাতেমা ও স্বতন্ত্র ভিপিপ্রার্থী শামীম হোসেন।
তবে ছাত্রদলের আবিদ ও শিবিরে সাদিক কায়েমের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করেন শিক্ষার্থী।
এদিকে, ছাত্রদল সমর্থিত ভিপিপ্রার্থীকে সবার থেকে এগিয়ে রেখেছেন অনেকে। কারণ, নারী ভোটারদের ভোট বেশি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে উমামা ফাতেমার। অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শামীম হোসেনের একটি আলাদা গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভোটের ভালো একটা অংশ তার দিকে ঝুঁকতে পারে। এগুলো বাদে আবিদুলের ব্যালট বাক্সে পতিত ফ্যাসিস্ট সরকার আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধ ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের ‘ছদ্মবেশি’ ভোটারদের ভোট পড়তে পারে। এমনকি সাদিক কায়েমকে হারাতে বামছাত্র সংগঠনগুলোর ভোটও আবিদ পেতে পারেন। আর ছাত্রদল বর্তমানে ক্যাম্পাসে সবচেয়ে বড় ছাত্রসংগঠন হওয়ায় কর্মী-সমর্থকও বেশি এবং তাদের সুনির্দিষ্ট ভোটব্যাংকও রয়েছে। সবমিলিয়ে দেখা যাচ্ছে, ডাকসুর ভোটের ময়দানে আবিদ কিছুটা এগিয়ে রয়েছেন। তবে, শেষ পর্যন্ত ভিপি হিসেবে জয়ের মালা কার গলায় উঠবে, সেটা দেখার জন্য ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
ডাকসুর সাবেক জিএস ও বাংলাদেশ জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য মুশতাক হোসেন বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অবশ্যই প্রার্থীর যোগ্যতা ও আদর্শ দেখে ভোট দেন। আমার অভিজ্ঞতা অন্তত সেটাই বলে। তবে এবার পরিবেশ-পরিস্থিতি ভিন্ন। যদি শেষ পর্যন্ত সবার জন্য সমান সুযোগ থাকে, তাহলে স্বল্প পরিচিত কেউও বেরিয়ে আসতে পারে।
সাবেক ভিপি ও নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘রাজনৈতিক কাঠামোয় এবার নির্বাচনটা হচ্ছে না। যদি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হয়, আর যদি শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিতে যায়, তাহলে অতি-উন্মাদনায় থাকা প্রার্থীও হেরে বসতে পারে।’
ভিপি পদে আলোচিত যারা
প্রচারণায় ভিপি পদে অনেকের মুখ পরিচিত হয়ে উঠেছে। গণমাধ্যমের বিভিন্ন আয়োজনেও তাদের সরব উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে। তাদের মধ্যে বেশি আলোচনায় ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের আবিদুল ইসলাম খান, ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট প্যানেলের সাদিক কায়েম, বাগছাস সমর্থিত বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদের আব্দুল কাদের, স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্যের উমামা ফাতেমা, বামজোটের প্যানেল প্রতিরোধ পর্ষদের শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি। আলোচনায় রয়েছেন ছাত্র অধিকার পরিষদ সমর্থিত ডাকসু ফর চেঞ্জ প্যানেলের বিন ইয়ামীন মোল্লা, স্বতন্ত্র প্রার্থী শামীম হোসেন, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন সমর্থিত সচেতন শিক্ষার্থী সংসদের ইয়াছিন আরাফাত ও সমন্বিত শিক্ষার্থী সংসদের জামালুদ্দীন মুহাম্মাদ খালিদ।
Leave a Reply