রিমান্ডে যা বললেন আনিসুল!

গণঅভ্যুত্থানে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এরপর দলের মন্ত্রী-এমপিদের মধ্যে অনেকেই পালিয়ে গেছেন আবার কেউ আছেন আত্মগোপনে। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন গ্রেপ্তার হয়ে রিমান্ডে আছেন।

ডিএমপি নিউমার্কেট থানায় দায়ের হওয়া হকার শাহজাহান আলী হত্যা মামলায় মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) গ্রেপ্তার করা হয় সালমান এফ রহমান এবং আনিসুল হককে। বুধবার (১৪ আগস্ট) তাদের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। তারা এখন ডিবি হেফাজতে আছেন। যে মামলায় তারা রিমান্ডে আছেন ওই মামলায় কোনো আসামির নাম নেই। তবে অজ্ঞাতনামা হিসাবে বিএনপি ও জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।

সদ্য বিদায়ী সরকার আমলে গত ১৬ জুলাই করা মামলায় গ্রেপ্তার হন সদ্য বিদায়ী সরকারের প্রভাবশালী এই উপদেষ্টা ও মন্ত্রী। রিমান্ডের প্রথম দিনের জিজ্ঞাসাবাদে তারা দেশে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরির জন্য দায় চাপাচ্ছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জমান খান কামাল ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ওপর।

ডিএমপির দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, গ্রেপ্তাররকৃতদের অপরাধ শুধু পুলিশ কেইসের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। শেয়ারবাজারসহ অনেক অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারিতে জড়িত সালমান এফ রহমান। সরকারের অনেক অপকর্মকে আইনি বৈধতা দেয়ার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রেখেছেন আনিসুল হক। তাই তাদের জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে হত্যা মামলার পাশাপাশি অর্থনৈতিক ও আইনগত বিষয়কে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।

জিজ্ঞাসাবাদে আনিসুল হক বলেন, দেশে ছাত্র অন্দোলন শুরু হওয়ার পর আমি একটি সমাধানের দিকে যাচ্ছিলাম। কিন্তু সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কারণে সেটা সম্ভব হয়নি। আন্দোলন দমনে তারা খুবই এগ্রেসিভ ছিলেন। এছাড়া তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও বাস্তবতা বোঝানো যাচ্ছিল না। এ কারণে আন্দোলন এক পর্যায়ে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। সালমান এফ রহমান এবং আনিসুল হককে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় ডিবির এক কর্মকর্তা দুজনের উদ্দেশে বলেন, আপনাদের অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাটের কারণেই দেশের এই অবস্থা। এ সময় তারা ছিলেন নির্বিকার।

এ বিষয়ে মামলার বাদী আয়েশা বেগম বলেন, আমার ছেলে পুলিশের গুলিতে মারা গেছেন। আমরা গরিব মানুষ। লেখাপড়া জানি না। মামলার এজাহার আমরা লিখিনি। ওটা পুলিশ লিখেছে। পড়ালেখা না জানলেও স্বাক্ষর করতে পারি। পুলিশ এজাহার লেখার পর কেবল স্বাক্ষর দিতে বলেছে। তাই এজাহারে স্বাক্ষর করেছি। একদিকে যেমন ছেলে হত্যার ন্যায়বিচার চাই, তেমনি যেসব পুলিশ অফিসার মিথ্যা এজাহার লেখার সঙ্গে জড়িত তাদের বিচার দাবি করছি।

এ বিষয়ে নিউমার্কেট থানার ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন, ভিকটিম শাহজাহান গুলিতেই মারা গেছেন। তার মাথায় গুলির ছিদ্র ছিল। সেখান থেকে পিলেট উদ্ধার করা হয়েছে। শরীরের অন্যান্য স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়নি। এভাবেই সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে আমরা ঘটনাস্থল থেকে সিসিটিভির ফুটেজও সংগ্রহ করেছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *