যুক্তরাজ্যে শেখ হাসিনার আশ্রয় প্রসঙ্গে যা বললেন রূপা হক!

গণ-আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। যুক্তরাজ্যে শেখ হাসিনার রাজনৈতিক আশ্রয় গ্রহণের সম্ভাবনা নিয়ে গুঞ্জনের মধ্যে দেশটির ব্রিটিশ-বাংলাদেশি সংসদ সদস্য রূপা হক বলেছেন, তার সরকারের এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া সমীচীন হবে না।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য স্ট্যান্ডার্ডের এক নিবন্ধে যুক্তরাজ্যে শেখ হাসিনার আশ্রয় না দেওয়ার পক্ষে তার মত তুলে ধরেন তিনি।

লেবার পার্টির সংসদ সদস্য রূপা হকের লেখাটি বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) দ্য স্ট্যাডার্ড প্রকাশ করেছে।

লেখার শুরুতে তিনি ঐতিহ্যবাহী ব্যান্ডদল বিটলসের অমর শিল্পী জর্জ হ্যারিসনের বাংলাদেশবিষয়ক গানের কথা তুলে ধরেন।

তিনি লিখেছেন, বাংলাদেশ কতটা বিশৃঙ্খল ছিল, তা নিয়ে গেয়েছিলেন জর্জ হ্যারিসন। গত সপ্তাহে তিনি আবার সঠিক প্রমাণিত হলেন। সাদ্দাম হোসেনের ক্ষমতাচ্যুতির মতো ঘটনার প্রতিফলন দেখা গেল, জাতির পিতার ভাস্কর্য গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো, কুশপুতুল পোড়ানো হলো, যা ঢাকা থেকে টাওয়ার হ্যামলেট (যুক্তরাজ্যের একটি পৌরসভা) পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছিল।

ছাত্র আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার পতনকে তিয়ানআনমেন স্কয়ারের সঙ্গে তুলনা করে রূপা হক লিখেছেন, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা দেশটির আয়ুষ্কালের বড় অংশই শাসন করেছেন (সর্বত্র তার বাবার ভাস্কর্য ও চিত্রকর্ম স্থাপন নিশ্চিত করে)।

দ্য স্ট্যান্ডার্ডের লেখায় রূপা হকও তার বাংলাদেশ ভ্রমণের কিছু অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন। সদ্যোবিদায়ি সরকারের আমলে ওঠা ভোট কারচুপি, গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ নিয়েও কথা বলেছেন তিনি।

যুক্তরাজ্যের ৪ জুলাইয়ের সাধারণ নির্বাচনে টানা চতুর্থবারের মতো লেবার পার্টি থেকে পার্লামেন্টের সদস্য হন পৈতৃক সূত্রে পাবনার মেয়ে রূপা হক, যার জন্ম ১৯৭২ সালে লন্ডনের ইলিংয়ে।

ইলিং সেন্ট্রাল অ্যান্ড অ্যাকটন আসন থেকে জয়ী রূপা লেবার পার্টির সদস্য হন ১৯৯১ সালে। তিনি একাধারে লেখক, মিউজিক ডিজে, কলামিস্ট হিসেবে পরিচিত।
পাবনা শহরের মকছেদপুরে রূপার দাদার বাড়ি, আর নানার বাড়ি শহরের কুঠিপাড়ায়। দাদা মনছের আলী ও নানা মুসা বিশ্বাস মারা গেছেন বেশ আগেই। আছেন তার মামা-চাচারা।

রূপা হক লিখেছেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, তার ব্যাপক অজনপ্রিয় শাসনামল ও অভিবাসনসংক্রান্ত রাজনৈতিক স্পর্শকাতরতার নিরিখে যুক্তরাজ্য সরকারের এমন একজনকে আশ্রয় দেওয়া সমীচীন হবে না, যার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বিচারের দাবি রয়েছে। অনেক বাংলাদেশি মনে করে, তাকে দেশে ফিরিয়ে বিচারের মুখোমুখি করা উচিত। রূপা চান, তার সরকার যেন শেখ হাসিনাকে আশ্রয় না দেয়।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *