‘আমাকে ছেড়ে দিন, দেশ ঠিক করে দেব’: সালমান এফ রহমান

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি খাতের উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন। নিউমার্কেট থানায় দায়ের করা হকার শাহজাহান আলী হত্যা মামলায় ১৩ আগস্ট তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। রাজধানীর মিন্টো রোডে অবস্থিত ডিবি পুলিশ কার্যালয়ে তাকে রিমান্ডে নেওয়া হচ্ছে।

সেখানে ডিবির জিজ্ঞাসায় সালমান এফ রহমান বলেন, আমাকে আটকে রাখলে, আমার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ৮০ হাজার লোক বেতন পাবে না। বিভিন্ন ব্যাংক থেকে যে ঋণ নেওয়া হয়েছে সেই ঋণের কিস্তি দিতে পারব না। এতে দেশেরই ক্ষতি হবে। তাই আমাকে ছেড়ে দিন। আমি দেশ ঠিক করে দেব।

এ সময় ডিবি কর্মকর্তা বলেন, ‘আপনি ঠিক করলে এখানেই করুন। কোর্টে গিয়ে কথা বলুন। কিন্তু আপনাকে ছাড়া হবে না। একের পর এক মামলায় কমপক্ষে এক বছর আপনাকে রিমান্ডে থাকতে হবে।’ সালমান এফ রহমানের কাছে ডিবির জিজ্ঞাসা-‘গত নির্বাচনের আগেই তো আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হওয়ার কথা ছিল। তখন হয়নি কেন?’ উত্তরে সালমান বলেন, আমরা ভারতের মাধ্যমে আমেরিকাকে ঝুঝাতে পেরেছিলাম যে, আমরা আমেরিকার পক্ষেই আছি। বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই। তখন আমাদের এবং ভারতের কথায় আমেরিকা কনভিন্স হয়েছিল। না হলে তখনই আমাদের পতন হয়ে যেত।’

সালমান এফ রহমানকে ডিবি কর্মকর্তারা বলেন, ‘মামলা তো মাত্র শুরু। কতগুলো মামলা হবে তা আমরাও জানি না। আপনাকে শুধু আদালতে যেতে হবে আর ডিবিতে আসতে হবে। এ সময় সালমান এফ রহমান বলেন, ওয়ান-ইলেভেনের সময় ২ বছর জেল খেটেছি। সুতরাং সমস্যা হবে না। তিনি বলেন, আমাকে জেলে রাখলে দেশের ক্ষতি হবে। কারণ আমার নানা প্রতিষ্ঠানে অনেক কর্মী আছে। তারা বেতন পাবে না। ব্যাংক থেকে যেসব টাকা ঋণ নিয়েছি সেগুলো পরিশোধ হবে না।

উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। এর পর থেকে প্রতিনিয়ত গ্রেফতার হচ্ছে আওয়ামী লীগ নেতারা।

এই মুহূর্তে যারা ডিবি হেফাজতে রিমান্ডে আছেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন, সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসান, সাবেক এমপি সাদেক খান, জাতীয় সংসদের সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, চট্টগ্রাম বন্দরের সাবেক চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মোহাম্মদ সোহায়েল, সাবেক ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাবেক সিনিয়র সচিব শাহ কামাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *