প্যারাসিটামল খালি পেটে নাকি খাওয়ার পর খেতে হয়, জানালেন চিকিৎসক!

কখনো প্রচণ্ড গরম, আবার কখনো আকাশে কোনো গর্জন ছাড়াই শুরু হয় বৃষ্টি। এরইমধ্যে আবার বর্ষারও আভাস রয়েছে। সবমিলে প্রায় ছয় ঋতুতেই ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়ার সম্ভাবনা থাকে। জ্বর ও ঠান্ডার সমস্যা তো রয়েছেই। এ সময় জ্বর আসলে প্রথমেই শরীর ও মাথাব্যথা হয়। আর শরীর ও মাথাব্যথা হলে যন্ত্রণার শেষ থাকে না।

এ পরিস্থিতিতে নিরাময় পেতে নির্দ্বিধায় প্যারাসিটামল সেবন করা হয়। তাতে সাময়িক সমস্যা থেকে মুক্তিও পাওয়া যায়। কিন্তু এই ওষুধ নিয়েই প্রশ্ন অনেকের মনে। ওষুধ হওয়ার কারণে অনেকেই প্রশ্ন করেন, প্যারাসিটামল কি ভরা পেটে, নাকি খালি পেটে সেবন করা উচিত? সম্প্রতি এ ব্যাপারে ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন কলকাতা শহরের বিশিষ্ট চিকিৎসক রুদ্রজিৎ পাল। এবার তাহলে বিষয়টি সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।

প্যারাসিটামল কীভাবে কাজ করে: মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস নামক একটি অংশ শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। যখন জ্বর হয়, তখন এই অংশটি নিজের কাজ ঠিকভাবে করতে পারে না। ফলে শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। এই জায়গায় প্যারাসিটামল কাজ করে। যা হাইপোথ্যালামসকে সক্রিয় করতে সহায়তা করে। যা তাপমাত্রা কমিয়ে আনে। আবার পপার স্লান্ডিং পাথওয়ের ওপরও কাজ করে তাপমাত্রা স্বাভাবিক করতে সহায়তা করে প্যারাসিটামল।

খালি পেটে নাকি খাওয়ার পর খাবেন: এ ব্যাপারে ড. রুদ্রজিৎ পাল বলেন, এ ক্ষেত্রে অনেকের মধ্যেই কোনো ধারণা নেই। মূলত প্যারাসিটামল খুবই তিতা ওষুধ। এ জন্য কোনো খাবার খাওয়ার পর তবেই এই ওষুধ খাওয়া উচিত। বিপরীতে খালি পেটে প্যারাসিটামল খাওয়া হলে বমি হতে পারে। পেটব্যথাও শুরু হতে পারে। তাই অন্তত কিছু খাবার খাওয়ার পর প্যারাসিটামল খেতে বলা হয়। ভারি খাবার খেতে মন না চাইলে মুড়ি, বিস্কুট ইত্যাদি খাওয়ার পর প্যারাসিটামল খেয়ে নিবেন।

দিনে কয়টি খাবেন: দিনে ২ গ্রামের বেশি প্যারাসিটামল খাওয়া ঠিক নয়। তবে কোনো ব্যক্তি ৬৫০ পাওয়ারের ওষুধ খান, তাহলে দিনে তিনটি। আর কেউ যদি ৫০০ পাওয়ারের প্যারাসিটামল খান, তাহলে দিনে চারটি খেতে পারেন। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ডোজ বাড়াতে পারেন। তবে পরামর্শ ছাড়া নিজে নিজে ডোজ বা সংখ্যা বাড়ানো ক্ষতির কারণ হতে পারে।

কখন সাবধান হতে হবে: অন্তঃসত্ত্বা নারী ও ছোট সন্তানদের জ্বর হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তা না হলে পরিস্থিতি জটিল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আবার ক্রমশ জ্বর বাড়তে থাকলে, ৫-৭ দিনেও না কমলে, মাথাব্যথা তীব্র হলে, শরীরে র‌্যাশ বের হলে ও শ্বাসকষ্ট হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী পরীক্ষা করে নিয়ম মতো ওষুধ সেবন করতে হবে।

ব্যথাতেও কার্যকরী: কেবল জ্বর হলেই নয়, পাশাপাশি ব্যথা নিরাময়েও প্যারাসিটামল সহায়তা করে। অন্যসব পেইনকিলারের থেকে প্যারাসিটামল অনেক নিরাপদ ও কার্যকরী একটি ওষুধ। এ জন্য দীর্ঘদিন ধরে নির্দ্বিধায় এই ওষুধ সেবন করতে পাররেন। এতে কিডনির ওপর কোনো চাপ বা প্রভাব পড়ে না। কিন্তু ব্যথার জন্য সেবন করলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *