সমন্বয়করা দুটো বড় ভুল করেছেন, সামনে কি হতে যাচ্ছে!

ছাত্র-জনতার বিপ্লব মানুষকে খুব আশাবাদী করেছিল। দেশী-প্রবাসীরা নতুন করে স্বপ্ন দেখা শুরু করে। কেউ কেউ দেশে ব্যাক করার চিন্তা-ভাবনা শুরু করেছিল। এখন সাধারন মানুষ মনে হচ্ছে কিছুটা নিরাশায় ভোগা শুরু করেছে।

লীগের মানুষরা- ‘আগেই ভাল ছিল’— ন্যারেটিভ বাজারে চালু করতে চেষ্টা করছে।

সমন্বয়করা দুটো বড় ভুল করেছেন, তবে এটা এখনো সংশোধনের সুযোগ রয়েছে।

এক

সমন্বয়ক শব্দটার মধ্যে এক ধরণের আবেগ-অনুভূতির ব্যাপার ছিল। কিন্তু এটার প্রতি আবেগ আস্তে আস্তে কমে যাচ্ছে। ঢাবি-কেন্দ্রিক সমন্বয়করা সুদুরপ্রসারী বিষয়টা গুরুত্ব দেয়নি।

প্রফেসর ইউনুস সাহেব ক্ষমতা গ্রহন করার পর পর ফেসবুকে রিকুয়েস্ট করেছিলাম দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়করা মিলে যেন গেট-টুগেদার আয়োজন করে। এরা তো নিজেরা নিজেদেরকেই চিনে না।

কিন্তু তারা পাবলিক-প্রাইভেট, ঢাকা-ঢাকার বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবলিক) ইস্যুর মাধ্যমে বিভাজিত হয়ে গেছে।

তবে এখনো সময় আছে গেট-টুগেদার করে শিক্ষার্থীদের ঐক্যবদ্ধ রাখা। এই সরকারের সফলতা এটির সাথে জড়িত।

ঢাকা বিভাগে ৮৬টি বিশ্ববিদ্যালয়, আর ঢাকা শহরে রয়েছে ৬২টি বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের এত ঘনত্ব বিশ্বের আর কোথায় নেই। ঢাকা যে বিশ্বের ইউনিক মেগাসিটি।

এছাড়া শত শত মাদ্রাসার হাজার হাজার শিক্ষার্থী, রয়েছে শত শত কলেজ। এদের ৩০-৫০% যদি একসাথে মাঠে নামে তবে যেকোন সরকারের টিকে থাকা প্রায় অসম্ভব। যার প্রমাণ ৫ আগষ্টে দেখেছি।

এরা মাঠে নামা মানে তাদের পিতামাতা, তথা পরিবারের সমর্থনও থাকবে।

শুধু ঢাকাকে কেন্দ্র করে পুরো দেশ নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। দূর্নীতিবাজ, সুযোগ সন্ধানী এবং ফ্যাসিবাদের দোসররা ভয়ে অস্থির থাকবে। যারা মন্দ লোক তাদের মধ্যে ভয় অনেক বেশি কাজ করে।

দুই

আহত-নিহত পরিবারের প্রতি মারাত্নক অবহেলা প্রমাণিত হয়েছে। এজন্য স্বাস্থ্য উপদেস্টার পদত্যাগ করা নৈতিক দায়িত্ব। যাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তাঁর এন-জি কেন্দ্রিক কিছু অভিজ্ঞতা রয়েছে। দেশের স্বাস্থ্যখাত পরিচালনা করার দক্ষতা যে নেই তা এখন প্রমাণিত। রাষ্ট্রের জন্য আহত-নিহতদের লিস্ট করা মাত্র ৭ দিনের কাজ। এই কাজটা কেন প্রাইরিটি দিলো না, তা নিয়ে তদন্ত করা উচিত ইয়াং উপদেস্টাদের, যারা মাঠে ছিলেন।

আর সময় ক্ষেপন না করে আহত পরিবারের চিকিতসা, খোঁজ খবর নেয়া,। আর শহীদ পরিবারের জন্য স্থায়ী ভাতা সিস্টেম করা (বিশেষ করে যাদের সমর্থ নেই)। এই বিষয়টাকে প্রাইরিটি দিলে মানুষের আস্থা ফিরে আসতে পারে।

গুরুত্বপূর্ন একটা প্রশ্ন-ধরুন এই সরকার আশানুরূপ কাজ করতে ব্যর্থ হলো, বা গুরুত্বই দিলো না মানুষের আবেগকে । তাহলে কি ফ্যাসিবাদী লোকজন ফিরে আসবে?

উত্তর হচ্ছে- Big NO.

বিএনপি, জামাতে ইসলামি, ইসলামপন্থী মানুষরা কখনোই চাইবে না হাসিনা আর ফিরে আসুক। তাই প্রফেসর ইউনুস সাহেব ব্যর্থ হলে তাড়াতাড়ি নির্বাচন হবে, আশানুরূপ সংস্কার হবে না। এরপরও মন্দের ভাল হবে।

শেখ হাসিনার মত নির্মম, নিকৃষ্ট চিন্তার লিডার আগামী ১০-২০ বছরে এই দেশে রাজনীতি করতে পারবে না।

মোদ্দা কথা- বিএনপি, জামাতে ইসলামী রাজনীতিবিদরা ফ্যাসিবাদের মত এতটা নীচে নামতে পারবেন না। তাই আশানুরূপ পরিবর্তন না হলেও দিনশেষে পজিটিভ কিছু হতে যাচ্ছে, ইনশাল্লাহ।

তবে ইসলামিক বিষয় নিয়ে সুড়সুড়ি, এলার্জি দেখালে পরিস্থিতি রাতারাতি পরিবর্তন হতে পারে। এই বিষয়টা যেন রাজনীতিবিদরা সবসময় মাথায় রাখেন। ইসলামিক চেতনার জাগরণ সম্ভবত ঠেকিয়ে রাখা যাবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *