‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ ব্যবস্থা কার্যকর করছেন মোদি!

ভারতের লোকসভায় এখন আর একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই মোদির দল বিজেপির। গুরুত্ব বেড়েছে এনডিএ জোটের। এরই মধ্যে ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ চালু করতে সক্রিয় কেন্দ্রের জোট সরকার।

ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআই এক সূত্রকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, এনডিএ সরকারের চলতি মেয়াদকালেই ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ কার্যকর হবে। নাম গোপন রাখার শর্তে ওই সূত্র পিটিআইকে বলেছে, ‘অবশ্যই এটি চলতি মেয়াদেই কার্যকর হবে। এটি বাস্তব রূপ নেবে।’

‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ ব্যবস্থা চালু করার বিষয়ে বিজেপি অনেকদিন ধরেই আগ্রহী। গত মাসে লালকেল্লায় ভারতের স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেয়ার সময়েও এই প্রসঙ্গ উঠে এসেছিল প্রধানমন্ত্রী মোদির গলায়। তার যুক্তি, ঘন ঘন নির্বাচন হওয়ায় দেশের উন্নয়নে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়।

‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ ব্যবস্থা চালু করার পক্ষে যুক্তি দিয়ে তিনি দাবি করেছিলেন, গোটা দেশ এই প্রক্রিয়াকে সমর্থন জানাচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোকেও এটিকে সমর্থন করার জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন মোদি।

যদিও বিজেপি বিরোধী দলগুলো শুরু থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছে ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ প্রক্রিয়ার। তাদের মতে, এই নীতি নিয়ে মোদি সরকার ঘুরপথে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ধাঁচের ব্যবস্থা চালু করতে চাইছে। এটি ‘যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো’ এবং ‘সংসদীয় গণতান্ত্রিক ভাবনার পরিপন্থি’ বলেও বিরোধী নেতৃত্বের অভিযোগ।

বিশেষ করে বিজেপি-বিরোধী আঞ্চলিক দলগুলোর আশঙ্কা, ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ নীতি কার্যকর হলে লোকসভার ‘ঢেউয়ে’ বিধানসভাগুলো ‘ভেসে যাবে’। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয়, সাংসদ এবং বিধায়ক নির্বাচনের ক্ষেত্রে যেটুকু বৈচিত্রের সম্ভাবনা রয়েছে, বিজেপির আগ্রাসী প্রচারের মুখে তা ভেঙে পড়বে বলেও অভিযোগ তুলেছে কংগ্রেস, তৃণমূল, সিপিএমসহ বিভিন্ন বিরোধী দল।

অন্যদিকে কেন্দ্রের তরফে আবার যুক্তি দেখানো হয়েছে, এই ব্যবস্থা চালু হলে ভোট প্রক্রিয়ার জন্য যে বড় অঙ্কের খরচ হয়, তা কমে যাবে। ভোটের আদর্শ আচরণবিধির জন্য বার বার সরকারের উন্নয়নমূলক কাজ থমকে থাকবে না এবং তার সঙ্গে সরকারি কর্মীদের ওপর থেকেও ভোটার তালিকা তৈরির চাপ কমবে।

এর আগে ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ ব্যবস্থা চালু করা কতটা বাস্তবসম্মত, তা খতিয়ে দেখতে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছিল। কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন সাবেক রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। গত মার্চেই সেই কমিটি রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে একটি রিপোর্ট জমা দিয়েছে। ওই কমিটিও এই নির্বাচনী প্রক্রিয়ার পক্ষেই মত দিয়েছে বলে সূত্রের দাবি।

সূত্র: আনন্দবাজার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *