গর্ভাবস্থায় হাড়ের দুর্বলতায় চিকিৎসকের পরামর্শ!

নারীদের গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন শারীরিক জটিলতার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। এই সময়ে শরীরে একাধিক পরিবর্তন আসে নারীদের। হরমোনের ভারসাম্যহীনতার পাশাপাশি শারীরিক গঠনেও কিছু পরিবর্তন আসে। বেশিরভাগ নারী গর্ভাবস্থাজনিত অস্টিওপোরোসিসের সমস্যার মধ্যে দিয়ে যান। এর কারণে গর্ভাবস্থার সময় ও পরে হাড়ের স্বাস্থ্যে প্রভাব পড়ে বলছেন চিকিৎসকরা।

গর্ভাবস্থাজনিত অস্টিওপোরোসিস: স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট নেচারবেস্টের প্রতিবেদনে গর্ভাবস্থাজনিত অস্টিওপোরোসিস নিয়ে বিস্তারিত কথা বলেছেন চিকিৎসকরা। দিয়েছেন বিভিন্ন পরামর্শ। অস্টিওপোরোসিস হলে মানুষের হাড় ভঙ্গুর হয়ে যায়। অস্টিওপোরোসিস হলে হাড়ের ঘনত্ব কমে যায়, হাড়ে ব্যথাও হয়। যেটা জটিল একটি সমস্যা। আর এ কারণে গর্ভাবস্থার সময় ও পরে নারীদের হাড়ে চিড় ধরতে পারে। এমনকি সহজে ভেঙেও যেতে পারে।

সাধারণত বয়স বাড়ার সঙ্গে এবং মেনোপজের পর নারীদের হাড়ের ঘনত্ব কমতে থাকে। তবে গর্ভাবস্থায় সময় অস্টিওপোরোসিস ধরা পড়ে মূলত হবু মায়ের শারীরিক গঠনগত পরিবর্তনের জন্য।

গর্ভাবস্থায় হাড় ঠিক রাখতে করণীয়: সুস্থ থাকতে গর্ভাবস্থায় হাড়ের যত্ন নিতে হবে। অর্থোপেডিক বলছেন কিছু কাজ করলে এই সময়ে হাড়ের শক্তি বাড়ানো সম্ভব।

ক্যালসিয়াম: হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য খনিজ ক্যালসিয়াম। গর্ভাবস্থায় নারীদের বেশি ক্যালসিয়ামের দরকার হয়। কারণ, শিশুর হাড় ও দাঁত গঠনের ক্যালসিয়াম ভূমিকা রাখে। পাশাপাশি মায়ের জন্য এর দরকার। এই সময়ে অস্টিওপোরোসিস থেকে বাঁচতে গর্ভবতী নারীরা ডায়েটে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার রাখতে বলেন চিকিৎসকরা। তাদের মতে খাদ্যতালিকায় প্রতিদিন গ্লাস দুধ রাখতে হবে। এছাড়াও সবুজ শাক-সবজি এবং অন্যান্য দুগ্ধজাত খাবার খেতে হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

ভিটামিন ডি: শরীরে ক্যালসিয়াম শোষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ভিটামিন ডি। তাই ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পাশাপাশি ডায়েটে ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার থাকাও জরুরি। এর জন্য খেতে পারেন ডিমের কুসুম, মাশরুম ও ফ্যাটি ফিশ। এছাড়া ভিটামিন ডি-র প্রাকৃতিক উৎস হল সূর্যালোক। তাই গর্ভাবস্থায় অবশ্যই ভোরের দিকে কিছুক্ষণ সূর্যের আলো গায়ে লাগান। তাতেই শরীরে ভিটামিন ডি-র সংশ্লেষ হবে।

শরীরচর্চা: গর্ভাবস্থায় ব্যায়াম করতে হবে। হবু মায়েরা হাঁটা, সাঁতার কাটা ও যোগাসন করতে পারেন। এতে স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। সঙ্গে মনও থাকবে চাঙ্গা। তবে কোনও ব্যায়াম বা শরীরচর্চা শুরু করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নেবেন।

যেসব অভ্যাস বাদ দিতে হবে: গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকতে কিছু জিনিস বাদ দতে হবে। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করতে হবে মাকে। গর্ভাবস্থায় ভুলেও ধূমপান বা মদ্যপান করা যাবে মা। এতে মা ও সন্তানের স্বাস্থ্যে প্রভাব পড়তে পারে। এমনকি মদ্যপানের কারণে হাড় দুর্বল হয়ে পড়ে।

গর্ভাবস্থাজনিত অস্টিওপোরোসিস খুব স্বাভাবিক বিষয়। তাই মা এবং শিশুর যত্ন নিতে হবে। সেই সঙ্গে মেনে চলতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শ। স্বাস্থ্যকর অভ্যাস মা অবে গর্ভের শিশুর সুস্থতার জন্য জরুরি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *