ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনায় দেশটির সশস্ত্র বাহিনী তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের সময় কোনো নাশকতা বা সাইবার আক্রমণের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইরনা জানিয়েছে, ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর জেনারেল স্টাফ বুধবার (২৯ মে) এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
গত ১৯ মে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ানসহ কমপক্ষে ৮ জন উচ্চপদস্ত সরকারি কর্মকর্তা দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সীমান্তবর্তী ইস্ট আজারবাইজান প্রদেশে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হন। ওই দুর্ঘটনায় প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ক্রুসহ তাদের সফর সঙ্গীরা সবাই নিহত হন।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষ এবং ছিন্নভিন্ন অংশগুলোকে নমুনা হিসেবে নিয়ে পরীক্ষা করা হয়। তাদের বিচ্ছুরণের ধরণ ও মূল অংশ থেকে আলাদা হওয়া অংশগুলোর দূরত্ব বিবেচনা করে বলা যায় যে, উড্ডয়নের সময় পাহাড়ের ঢালে সরাসরি আঘাতের ফলে বিধ্বস্ত হয় যানটি। বিধ্বস্তের আগমুহূর্তে কোনো ধরনের নাশকতার ঘটনা ঘটেনি।
তদন্ত প্রতিবেদন স্পষ্ট করা হয়, ইলেক্ট্রনিক ওয়ারফেয়ার বা সাইবার আক্রমণের কারণেও হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা ঘটেনি। এমনকি হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার আগে তার কমিউনিকেশন সিস্টেম বা ফ্রিকোয়েন্সিতে কোনো সমস্যা ছিল না। এই হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার মূল কারণ বের করার আগ পর্যন্ত আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও গবেষণা চলতে থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
এরআগে ২৩ মে ইব্রাহিম রাইসির হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় প্রথম একটি তদন্তের ফল প্রকাশ করে দেশটির সেনাবাহিনী।প্রতিবেদন মতে, হেলিকপ্টারটির ধ্বংসাবশেষে বুলেট বা গুলির কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ এটি গুলি বা বোমা ছুড়ে ভূপাতিত করা হয়নি। তদন্তকারীরা নিশ্চিত করেছে, মাটিতে আঘাত করার পরই হেলিকপ্টারটিতে আগুন ধরে গিয়েছিল।
তদন্তে আরও বলা হয়েছিল, রাইসির হেলিকপ্টারটি নির্ধারিত ফ্লাইট পথ ছাড়া অন্য কোনো দিকে যায়নি। এমনকি বিধ্বস্ত হওয়ার প্রায় দেড় মিনিট আগেও হেলিকপ্টারটির পাইলট বহরের অন্য দুটি হেলিকপ্টারের পাইলটদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন।
গত ১৯ মে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ানসহ কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তা উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হন। সে সময় দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে আকাশের ঘন কুয়াশা ও খারাপ আবহাওয়ার কথা বলা হয়।
Leave a Reply