সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের ৫ জন নেতার জন্য কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশে ভয়াবহ পরিস্থিতি হয়েছিল। আর এ পরিণতির জন্য শেখ হাসিনা নিজেই দায়ী।
গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে তিনি এ স্বীকারোক্তি দিয়েছেন বলে ডিবি সূত্রে জানা গেছে। ওই পাঁচ নেতা হলেন- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাবেক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
ইমামতি করা নিয়ে ঝগড়া, যুবকের ঘুসিতে বৃদ্ধের মৃত্যু
সালমান এফ রহমান ডিবিকে বলেছেন, আমি যেহেতু ব্যবসায়ী, তাই ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আমার বেশি বৈঠক হতো। ওইসব বৈঠক থেকে দেশের অবস্থা স্থিতিশীল রাখতে তারা চাপ দিত। আমি ওই চাপের কথা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীকে অবগত করতাম। কিন্তু তিনি পাত্তা দিতেন না। রুদ্ধদ্বার বৈঠকগুলোতে আমাকে রাখতেন না।
কারফিউ ঘোষণার দিন ওবায়দুল কাদেরের ‘দেখামাত্র গুলির নির্দেশ’-এর বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, আইনগতভাবে এটা বলার সুযোগ নেই। তিনি কেন এ ধরনের কথা বলেছেন তার ব্যাখ্যা তিনি নিজেই দিতে পারবেন।
যুক্তরাষ্ট্র কানেকশনের বিষয়ে জানতে চাইলে সালমান এফ রহমান ডিবিকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমার কোনো বিশেষ কানেকশন ছিল না। তারা আমাদের দেশে অনেক বিনিয়োগ করেছে। কিন্তু টাকা নিতে পারছিল না। এ কারণে তারা মাঝেমধ্যে আমাকে নক করতো।
যুক্তরাষ্ট্রের লোকজন কেন বারবার এসে আপনার সঙ্গে বৈঠক করতো? জানতে চাইলে সালমান এফ রহমান ডিবির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে বলেন, বৈঠকগুলো ছিল মূলত অর্থনৈতিক বিষয়ে। ডলার সংকটসহ নানা কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীদের মুনাফা দিতে পারছিলাম না। তাদের সঙ্গে রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে আমি কোনো কথা বলতাম না।
৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর একের পর এক আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা, সাবেক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তারা গ্রেপ্তার হন। বিভিন্ন মামলায় ডিবি হেফাজতে রিমান্ড শেষে ইতিমধ্যেই তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের বরাত দিয়ে ডিবি সূত্র জানায়, গ্রেপ্তারকৃতদের অনেকেই বলেছেন, তারা শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বারবার সতর্ক করেছেন। বলেছেন, যা হচ্ছে তা ভালো হচ্ছে না। কিন্তু তারা কোনো উপদেশই শোনেননি। শেখ হাসিনা ছিলেন একরোখা।
সূত্র: ইত্তেফাক
Leave a Reply