হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরুল্লাহর মৃত্যুর খবরের পর ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে দেশের ভেতরে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। দেশটির দুজন আঞ্চলিক কর্মকর্তা শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) এই তথ্য জানিয়েছেন। খামেনিকে যেখানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে সেখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও উন্নত বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
এদিকে লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরুল্লাহর মৃত্যুর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। তিনি বিশ্বের সব মুসলমানকে তাঁদের যা আছে তাই নিয়ে জালেম ইসরায়েলকে মোকাবিলার আহ্বান জানিয়েছেন।
একই সঙ্গে তিনি লেবাননের জনগণ এবং হিজবুল্লাহর পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ করেছেন। ইরান ইন্টারন্যাশনাল এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
খামেনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, জায়নবাদীদের জানা উচিত যে, লেবাননে হিজবুল্লাহর মজবুত ভিত্তির বড় কোনো ক্ষতি করার যোগ্যতা তাঁদের নেই। এই অঞ্চলের সমস্ত প্রতিরোধী শক্তি হিজবুল্লাহর পাশে আছে এবং সমর্থন করবে। এই অঞ্চলের ভাগ্য নির্ধারণ করবে ইরানের ‘প্রতিরোধী শক্তি’। আর তাঁদের নেতৃত্বে থাকবে হিজবুল্লাহ।
গতকাল শুক্রবার লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর প্রধান নেতা হাসান নাসরুল্লাহকে লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায় দখলদার ইসরায়েল। তাঁরা দাবি করেছে, এই হামলায় নাসরুল্লাহ নিহত হয়েছেন। হিজবুল্লাহও তার মৃত্যু নিশ্চিত করেছে। এরপরই ইরানি সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার খবর জানা গেল।
ইরানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, হিজবুল্লাহ এবং অন্যান্য মিত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে তাঁরা যোগাযোগ রাখছে। নাসরুল্লাহর ওপর হামলার জবাবে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে সেটি এখন ঠিক করা হবে।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ভয়াবহ বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। ওই হামলার লক্ষ্যবস্তু করা হয় হিজবুল্লাহর সদর দপ্তরকে। হামলার সময় নাসরুল্লাহ সদর দপ্তরে ছিলেন বলে দাবি করেছে ইসরায়েল। এই হামলায় ২ হাজার কেজির বাঙ্কার বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়। আর ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয় অত্যাধুনিক এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান থেকে। গতকাল স্পষ্ট করে কিছু না জানালেও আজ শনিবার সকালে ইসরায়েল দাবি করেছে, তাদের হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন নাসরুল্লাহ।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। হামাসকে সহযোগিতা করতে এরপরের দিন থেকে ইসরায়েলের অবৈধ বসতি লক্ষ্য করে হামলা চালানো শুরু করে হিজবুল্লাহ। এত দিন যুদ্ধ হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে থাকলেও; দুই সপ্তাহ আগে থেকে ইসরায়েল হিজবুল্লাহকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে। তারা পেজার ও ওয়াকিটকিতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে হিজবুল্লাহর কয়েক হাজার যোদ্ধাকে আহত করে। এরপর বিমান হামলা চালিয়ে হত্যা করে একাধিক কমান্ডারকে। সর্বশেষ নাসরুল্লাহকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা করে তারা।
সূত্র: রয়টার্স
Leave a Reply