বাড়ির পেছনে চোরাই গরু বাঁধা থাকায় চুরির অপবাদ দিয়ে বসতঘরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে হামলাকারীরা। মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার খারুয়া ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চল আবদুল্লাহপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী ও স্থানীয়রা জানায়, মাইকে ঘোষণা দিয়ে মো. রসুম উদ্দিনের (৬৫) বাড়িতে হামলা চালায় আশপাশের গ্রামের মানুষজন। হামলা করে কমপক্ষে ১২টি বসতঘর ভাঙে তারা।
অগ্নিসংযোগের আগে ঘরগুলোতে লুটপাট করে তারা। এ ছাড়া কয়েকটি খড়ের গাদায় আগুন ধরিয়ে লুট করে নিয়ে যায় ৪০টি গরু।
বাড়ি-ঘর হারিয়ে পাগলপ্রায় রসুম উদ্দিন বলেন, ‘সোমবার সকালে আমার বাড়ির পেছনে জঙ্গলে কে বা কারা গরু বেঁধে রেখে যায়। তখন স্থানীয়রা মনে করে, ওই গরুর সঙ্গে আমাদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।
মাইকে প্রচার করে আমাদের বাড়িতে হামলা চালায় একটি দল। তখন অনেক জায়গায় জানানো হলেও কেউ আমলে নেয়নি।’
রসুম উদ্দিন কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘এই দেশে কি কোনো আইন নাই। যদি আইন থাকে আমার এই সব্বনাশ কীবায় করল।
আমরা অপরাধী হলে বিচার করত। তাই বইল্যা আমার নিজের ও পাঁচ পুতের সংসার ধ্বংস কইরা দিব? এই বিচার কেডা করব।’
এ ধরনের অত্যাচার কিভাবে হয় প্রশ্ন করে রসুম উদ্দিনের পুত্রবধূ নাসিমা খাতুন বলেন, ‘বাইরের গ্রামের মানুষের পা ধরে বলেছি, বাড়ি-ঘরে যেন হামলা না চালায়। কিন্তু আমাদের কথা কেউ শুনেনি। বসতঘরগুলো পুড়িয়ে দেওয়ায় আমাদের পরিবারের প্রায় ৪০ জনের মতো সদস্যকে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাতে হবে।
পরনের কাপড় ছাড়া আমাদের আর কিছু নেই। আমাদের গরু, হাঁস-মুরগি লুট হয়ে গেছে। খাবার কিছুই নেই।’
নান্দাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফরিদ আহমেদ জানান, পুলিশ ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে যান তিনি। কী কারণে লোকজন উত্তেজিত হয়ে রসুম উদ্দিনের বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় থানায় এখনো কোনো অভিযোগ করা হয়নি।
নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অরুণ কৃষ্ণ পাল বলেন, আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশকে বলা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সহায়তা দেওয়া হবে।
Leave a Reply