ইলিশ ধরা বন্ধের আসল কারণ জানেন কি?

ইলিশের নিরাপদ প্রজনন নিশ্চিতে আগামী ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন সারাদেশে ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই সময় দেশব্যাপী ইলিশ পরিবহন, ক্রয়-বিক্রয়, মজুদ ও বিনিময় নিষিদ্ধ থাকবে। কিন্তু এই সময়টা কেন বন্ধ করা হয় ইলিশ ধরা? এমন প্রশ্ন অনেকের মনেই জাগে।

ইলিশ ধরা বন্ধ করার মূল কারণ ইলিশের প্রজনন ও বংশবৃদ্ধি সুরক্ষিত রাখা। এটি ইলিশ মাছের সংখ্যা বৃদ্ধি ও সংরক্ষণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। প্রজনন ঋতুতে, সাধারণত সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর মাসের মধ্যে ইলিশ মাছ ডিম ছাড়ে তাই নির্দিষ্ট একটি সময়ে মাছ ধরা বন্ধ করতে হয়। এর পেছনে রয়েছে বেশকিছু সুবিধাজনক কারণ-

১. ইলিশের প্রজনন সুরক্ষা: প্রজননকালে ইলিশ ডিম ছাড়ে এবং বাচ্চা ইলিশ (জাটকা) বেড়ে ওঠে। এই সময় ইলিশ ধরা হলে ডিম ছাড়া এবং বংশবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয়। ফলে ইলিশের সংখ্যা কমে যেতে পারে।

২. মাছের সংখ্যা বৃদ্ধি: প্রজননকালে ইলিশ ধরা বন্ধ থাকলে মাছগুলো নিরাপদে ডিম ছাড়তে পারে। ফলে নতুন ইলিশের সংখ্যা বাড়ে এবং সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য বজায় থাকে।

৩. টেকসই মাছ ধরা নিশ্চিতকরণ: ইলিশের প্রজনন সুরক্ষিত রাখার মাধ্যমে টেকসই মাছ ধরা নিশ্চিত করা যায়। দীর্ঘমেয়াদে মাছের প্রাপ্যতা বজায় রাখার জন্য এটি জরুরি।

৪. আইন ও নীতি অনুযায়ী সংরক্ষণ: ইলিশ সংরক্ষণে বাংলাদেশের সরকার ‘মৎস্য সংরক্ষণ আইন’ প্রয়োগ করে। এই আইন অনুসারে প্রজনন মৌসুমে ইলিশ ধরা, বিক্রি, সংরক্ষণ ও পরিবহন নিষিদ্ধ করা হয়, যাতে ইলিশের প্রাকৃতিক বংশবৃদ্ধি নিশ্চিত করা যায়।

এই পদক্ষেপগুলো ইলিশের প্রাকৃতিক উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে এবং ভবিষ্যতে ইলিশের মজুদ বৃদ্ধি ও এর মাধ্যমে জেলেদের অর্থনৈতিক অবস্থাও সুদৃঢ় করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *