শেয়াল-কুকুর খেয়েছে আমেনার মরদেহ!

মরদেহের কিছু অংশ শেয়াল বা কুকুর খেয়ে ফেলায় এবং পচে যাওয়ায় শনাক্ত করা যাচ্ছিল না পরিচয়। এ অবস্থায় পরিচয় শনাক্তের দায়িত্ব পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ক্রাইম সিন ইউনিট। দায়িত্ব পেয়ে শুক্রবার পিবিআই জানায়, মরদেহটি ৩৫ বছর বয়সী আমেনা বেগমের। তিনি চট্টগ্রাম নগরের বলুয়ার দিঘির পাড় এলাকার আবুল কালাম সওদাগর কলোনির কামাল উদ্দিনের মেয়ে। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার নাগেরকান্দি গ্রামে।

এর আগে, বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বৈরাগ এলাকার চায়না ইকোনমিক জোন কার্যালয়ের পাশে পরিত্যক্ত একটি ইটভাটা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

নিহত আমেনার পরিবার জানায়, বেড়ানোর কথা বলে আমেনাকে আনোয়ারা নিয়ে যান স্বামী ইয়াসিন আরাফাত। সেখানে তাকে খুন করে বিদেশে পালিয়ে যান ইয়াসিন।

পুলিশও বলছে, স্বামীর হাতেই খুন হয়েছেন আমেনা। খুনের পর পরিত্যক্ত জায়গায় ফেলা হয় তার মরদেহ।

আমেনার বাবা কামাল উদ্দিন বলেন, আমার মেয়েকে বেড়ানোর কথা বলে আনোয়ারায় নিয়ে যায় তার স্বামী। সেখানে খুন করে মরদেহ ফেলে রেখে বিদেশে চলে যায় সে। স্বামীই আমার মেয়েকে খুন করেছে।

পিবিআই চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের এসআই শাহাদাত হোসেন বলেন, ঐ নারীর পেটে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে- মঙ্গলবার রাত ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার মধ্যবর্তী কোনো সময়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে। পরে মরদেহটি ঘটনাস্থলে ফেলে চলে যায় হত্যাকারীরা। আইনিপ্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

জানা গেছে, আমেনার এটি দ্বিতীয় বিয়ে। আগের সংসারে দুই সন্তান রয়েছে। দুবাই প্রবাসী ইয়াসিন আরাফাতের সঙ্গে তার দ্বিতীয় বিয়ে হয়। এই সংসারে একটি সন্তান রয়েছে। কিন্তু পুত্রবধূ হিসেবে আমেনাকে মেনে নিতে পারেনি ইয়াসিনের পরিবার। তাই আমেনাকে নগরের বাকলিয়া থানার তক্তারপুল এলাকায় একটি বাসায় রাখতেন ইয়াসিন।

আনোয়ারা থানার ওসি মোহাম্মদ মনির হোসেন বলেন, ইয়াসিন দুবাই প্রবাসী। কিছুদিন আগে তিনি দেশে আসেন। স্ত্রী আমেনাকে না জানিয়ে আরেকটি বিয়ে করেন ইয়াসিন। পরে আমেনা জানতে পারলে বিষয়টি নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য হয়।

ওসি বলেন, মঙ্গলবার দাওয়াতের কথা বলে আমেনাকে আনোয়ারায় নিয়ে যান ইয়াসিন। সেখানে তাকে হত্যা করেন। দুদিন পর বৃহস্পতিবার ইয়াসিন দুবাই চলে যান। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। জড়িত অন্যদেরও শনাক্ত করে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *