প্রত্যেকের বাড়িতে প্রতিদিন ভাত বসানোর আগে মা ঠাকুমারা, ভালোভাবে চাল ধুয়ে নেন। এতে চালের মধ্যে থাকা নোংরা বেরিয়ে যায় এবং ভাত পরিষ্কার হয়। প্রত্যেক বাড়িতেই চাল ধোয়া হয়ে গেলে সেই জল ফেলে দেওয়া হয় বেসিনে। তবে এই চাল ধোয়া জলের এমন কিছু গুনাগুণ আছে যা থেকে বিভিন্ন উপকারিতা গাছ পেয়ে থাকে।
চাল ধোয়া পানি
বাড়িতে অনেকেই ফুলফলের গাছ লাগিয়ে থাকেন। গাছকে সতেজ রাখতে ও সঠিকভাবে পরিচর্যা করার জন্য বাগানিরা বিভিন্ন সার কীটনাশক ব্যবহার করে থাকে। তবে এর পাশাপাশি চাল ধোয়া জল থেকেও গাছ নানাভাবে উপকৃত হয়।
দেখে নেওয়া যাক চাল ধোয়া জলে বিভিন্ন উপকারিতা :
* চাল ধোয়া জলে থাকে গাছের উপকারী বিভিন্ন উপাদান। যেমন ফসফরাস ৪৭% ,পটাশিয়াম ৪১%।
* চাল ধোয়া রয়েছে গাছের অত্যন্ত উপকারী একটি উপাদান ক্যালসিয়াম ২৫%।
* এছাড়াও রয়েছে লোহা ৪৭%, জিংক ১১%, অ্যামাইনো অ্যাসিড ৫%, ফাইবার ৩০%।
* এই সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলি ছাড়া গাছ সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে পারে না।
গাছের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো নাইট্রোজেন। তবে তবে চাল দেওয়া জলে নাইট্রোজেন না থাকলেও থাকে স্টার্চ যা গাছকে বেড়ে উঠতে সাহায্য করে। গাছে ফুল-ফল আসতেও সাহায্য করে এই স্টার্চ।
স্টার্চ গাছের মাটিতে থাকা বিভিন্ন ধরনের উপকারী ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাককে প্রচুর পরিমাণে বাড়িয়ে তোলে। এই সমস্ত ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক মাটিতে থাকা যে সমস্ত উপাদান গাছ সরাসরি গ্রহণ করতে পারে না সেই সমস্ত উপাদানগুলিকে এমনভাবে ভেঙে ফেলে যাতে গাছ খুব সহজেই সেই সমস্ত উপাদান গুলিকে গ্রহণ করতে পারে।
দেখে নেওয়া যাক গাছে এই চাল দেওয়ার জল প্রয়োগের পদ্ধতি :
অনেকেই চাল দু-তিন বার ধুয়ে থাকেন। তবে এক্ষেত্রে প্রথমবারের চাল ধোওয়া জল গাছে প্রয়োগ করতে হবে। ৮ থেকে ১০ ইঞ্চির টবে প্রায় ২০০ গ্রাম চাল ধোওয়া জল প্রয়োগ করতে হবে। টব যদি ১২-১৩ ইঞ্চির হয় তবে ৩০০ গ্রাম জল দেওয়া যেতে পারে।
টানা এক থেকে দুমাস একটি গাছের গোড়ায় এই চাল ধোওয়া জল সপ্তাহে এক থেকে দুবার প্রয়োগ করলে গাছ অনেক বেশি সতেজ থাকবে দ্রুত বৃদ্ধি পাবে এবং গাছে বিভিন্ন পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাবে।
গাছে এই চাল ধোওয়া জল প্রয়োগের ক্ষেত্রেও কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে :
কখনোই চাল ধোয়া জল ১-২ দিন জমিয়ে গাছের গোড়ায় দেওয়া উচিত নয়। এতে গাছের উপকারের চেয়ে ক্ষতি হবে বেশি। তাই দিনের দিনই এই জল প্রয়োগ করা গাছের জন্য ভালো। এতে গাছের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয় এবং গাছ সুস্থ-সতেজ থাকে।
Leave a Reply