ছেলেকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল, তা মাটি চাপা দিয়েছে খুনিরা’!

ময়মনসিংহের সুতিয়া নদী থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ওমর ফারুক ওরফে সৌরভকে (২২) উদ্ধার করা হয়েছে। চাচাতো বোনের সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে করায় চাচার হাতে প্রাণ হারিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার চাচা অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য ইলিয়াসকে খুঁজছে পুলিশ।

সোমবার (৩ জুন) দুপুর ১২টার দিকে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার তারাটি গ্রামে নিহত সৌরভের বাড়িতে গিয়ে শোনা যায় স্বজনদের কান্নার রোল। তার মরদেহ আসার অপেক্ষায় রয়েছেন পাড়া-প্রতিবেশি-আত্মীয়রা। পারিবারিক গোরস্তানে কবর খোঁড়ার কাজ চলছে।

জানা গেছে, প্রথমে নিহত সৌরভকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে খবর পাওয়া গেলেও তার পরিবার জানিয়েছে তিনি রাজধানীর গুলশানের প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তারা পরিবারসহ স্থায়ীভাবে ঢাকার মতিঝিলে বসবাস করেন। তার বাবার নাম ইউসুফ আলী।

সৌরভের মা পারুল আক্তার আহাজারি করে বলছেন, ‘ছেলেকে নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন ছিল। সেই স্বপ্ন মাটি চাপা দিয়েছে খুনিরা। এখন সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে। ছেলেকে যারা হত্যা করেছে, তাদের সবার ফাঁসি চাই।’

তিনি জানান, ‘কোচিংয়ে যাওয়ার কথা বলে গত শনিবার দুপুর ১২টার দিকে সৌরভ মতিঝিলের বাসা থেকে বের হয়ে যায়। বাসায় না ফেরায় ছেলের মুঠোফোনে খোঁজ নেন; তবে ফোন বন্ধ পান। বিষয়টি তার মেয়েকে জানান। মেয়ে তাকে জানায় সৌরভের সঙ্গে তার কথা হয়েছে। সে বাসায় ফিরবে বলে জানিয়েছে। এর পর থেকে ছেলের মুঠোফোন বন্ধ ছিল।’

পারুল আক্তার জানান, ‘বিয়ের খবর জানার পর থেকে তার দেবর ইলিয়াস প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ ছিলেন। তার স্বামীর মুঠোফোনে ফোন করে ওমর ফারুককে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছিলেন। সেই হুমকির রেকর্ডও তাদের কাছে রয়েছে। ওই বিষয়ে ওমর ফারুক রাজধানীর মতিঝিল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানকার পুলিশ ঈশ্বরগঞ্জ থানায় গিয়ে জিডি করতে বলেছিল।’

এর আগে রোববার (২ জুন) সকালে ময়মনসিংহের সুতিয়া নদী থেকে উদ্ধার করা হয় সৌরভের লাগেজবন্দি চার খণ্ড মরদেহ। এ ঘটনায় তার বাবা ইউসুফ আলী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে এদিন রাতে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানায় হত্যা মামলা করেছেন।

নিহত ওমর ফারুকের আত্মীয় বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘গত ১২ মে ওমর ফারুক তার চাচাতো বোনকে বিয়ে করেন। দুই পরিবারের অজ্ঞাতে ঢাকায় তারা দুজন বিয়ে করেছিলেন। তার চাচা ইলিয়াস উদ্দিন এ বিয়ে মেনে নেননি। তিনি ওই বিয়ের জন্য বড় ভাইয়ের পরিবারের সদস্যদের দোষারোপ করেছিলেন। বিয়ের পরদিন মেয়েকে কৌশলে ময়মনসিংহ নগরের বাসায় নিয়ে আসেন। পরে ১৬ মে মেয়েকে কানাডায় পাঠিয়ে দেন। ওমর ফারুককে হত্যার ঘটনায় তার চাচা ইলিয়াছ উদ্দিনের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।’

Copied from: https://www.rtvonline.com/country/276576

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *