বাংলাদেশ রেলওয়ের অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে আন্দোলন করে দেশজুড়ে মানুষের কাছে পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি। এরপর গত বছরের শুরুতে ক্যাম্পাসে চা বিক্রেতা হয়ে আবারও আলোচনা আসেন তিনি। সর্বশেষ ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিয়ে ছিলেন আলোচনায়।
টাকার প্রয়োজন থেকেই চা বিক্রি করেছেন জানিয়ে গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে মহিউদ্দিন বলেছিলেন, ‘রেলওয়ে আন্দোলনের পর আমি অনেক অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। তখন আমি ঋণগ্রস্ত হয়ে যাই। এসময় দেখা যায়, অনেকেই আমার সহযোগিতায় এগিয়ে আসতে চায় এবং অনেক সুযোগ দিতে চায়। তখন দেখলাম যে, এই সুযোগগুলো আমার নীতির সঙ্গে যাচ্ছে না। এগুলো থেকে বাঁচার জন্য আমার কিছু না কিছু তো করতে হতো, সেজন্যই আমি এই ব্যবসা শুরু করলাম।’
সম্প্রতি ওমরাহ পালন করতে যাওয়ার একটি পোস্ট দিয়ে আবারও সমালোচনায় মহিউদ্দিন রনি। শনিবার (১২ অক্টোবর) তার ফেসবুক পেজে তিনি বিমানের সামনে দাঁড়িয়ে একটি ছবি পোস্ট করেন।
ছবির ক্যাপশনে তিনি লিখেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহর পবিত্র কা’বা ঘর তাওয়াফ করার উদ্দেশ্যে মুসাফিরের বেশে সফর শুরু করেছি। সকলের কাছে শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য দোয়াপ্রার্থী।’
পোস্টটি দেয়ার পরেই নেটিজেনদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। অনেকে তাকে অভিনন্দন জানায়। আবার অনেক নেটিনেজ তার টাকার উৎস নিয়ে প্রশ্ন তুলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের একটি পেজে অভিযোগ তুলে পোস্ট করা হয়, ‘অনেকেই বলছেন, ৫ আগস্টের পর মহিউদ্দিন রনির জীবনযাপন পাল্টে গেছে। আগে রনি ক্যাম্পাসে চা বিক্রি করলেও এখন তিনি হলের গরু ভোজে প্রায় লাখ টাকার গরু দেয়, ওমরাহ করার সক্ষমতা অর্জন করে ফেলেন। এসব কারণে ছাত্র জনতার আন্দোলনের স্পিরিট নষ্ট হচ্ছে। তারা মহিউদ্দিন রনির টাকার উৎস জানতে চান। আপনাদের কী মনে হয়? মহিউদ্দিন রনির টাকার উৎস জানতে চাওয়া যৌক্তিক?’
জায়ান আবেদিন নামের এক ব্যক্তি লাভ রিয়্যাক্ট দিয়ে মন্তব্য করেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, চা বিক্রি করে ভাইয়া অনেক টাকা জমিয়েছে’।
জুম্মfন নামের অন্য একজন মন্তব্য করে লিখেন, ‘চা বিক্রেতা চা বিক্রি করে হজ করতে পারে, তাহলে আমিও পারবো ইনশাআল্লাহ। তবে টাকা কেমন মারলেন ভাই’।
মাহিরুল নামের একজন লিখেন, ‘কোথায় চা বেঁচলে হজ্জ করার মতো টাকা হবে?’ এছাড়া কয়েকজন কে আগের পোস্টে টাকা না থাকার ব্যাপারে তার মন্তব্যের স্ক্রিনশট দিতে দেখা যায়।
এর আগে গত আগস্টে মহিউদ্দিন রনির বিরুদ্ধে ঢাবির শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল থেকে শিক্ষার্থীদের কয়েকটি মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগ উঠে।
তার বিরুদ্ধে তিনটি বাইক চুরির সাথে জড়িত থাকার অভিযোগের তথ্য পাওয়ার দাবি করে একটি বেসরকারি গণমাধ্যম। অভিযোগ উঠেছে, হল থেকে বের করা এসব বাইকের একটি বিক্রি করে ফেলা হয়েছে আর কয়েকটি বাইকের চাবি পরিবর্তন করে তার ছোট ভাইদের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছেন রনি।
Leave a Reply