হাঁটলে কি সত্যিই হাঁটু ব্যথা বাড়ে, যা বলছেন বিশিষ্ট চিকিৎসক!

বর্তমান সময়ে অনেক অল্প বয়সীদের কাছেও শোনা যায় তার হাঁটুতে ব্যথা। এ ধরনের ব্যথায় কম-বেশি সবাই ভুগেছেন। বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে এই রোগের প্রকোপ বেশি দেখা যায়। এ রোগে যদি একবার আক্রান্ত হয় কেউ, তাহলে হাঁটাচলায় সমস্যা হয়। ব্যথা-যন্ত্রণায় জর্জরিত হয়ে থাকতে হয়। যা অসহনীয়।

এ ধরনের সমস্যায় আক্রান্তরা প্রায়ই বিভিন্ন ধরনের সমাধান খুঁজেন। এ রোগে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন পরামর্শ দেখা যায়। তাতে কোথাও দেখা যায়, পায়ের ওপর ভর করে চলাফেরা করায় ব্যথা বাড়তে পারে। এ জন্য কেউ কেউ হাঁটাও বন্ধ করে দেন। কিন্তু হাঁটার কারণে কি আসলেই ব্যথা হয় বা বাড়ে? সম্প্রতি এ ব্যাপারে ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন কলকাতা শহরের বিশিষ্ট চিকিৎসক আশিস মিত্র। এবার তাহলে হাঁটু ব্যথা নিয়ে জেনে নেয়া যাক।

হাঁটলে কি ব্যথা বাড়ে: এ ব্যাপারে ডা. আশিস মিত্র বলেন, হাঁটুর দুই হাড়ের মধ্যে সাইনুভিয়াল ফ্লুইড থাকে। এ তরলের মাত্রা অনেক সময় স্বাভাবিকের থেকে কমে গিয়ে থাকে। এ অবস্থায় হাড়ে হাড়ে ঘষা লাগে। এতে ব্যথা হয়। এর নাম হচ্ছে অস্টিওআর্থ্রাইটিস। কিন্তু ভুক্তভোগীরা মনে করেন, হাঁটলে হয়তো ব্যথা বাড়তে পারে। এই ভাবনা ঠিক নয়। বরং হাঁটু ব্যথায় হাঁটলে ব্যথা কমে।

যেসব নিয়ম মানতে হবে: হাঁটু ব্যথা নিয়ে হাঁটতে চাইলে অবশ্যই সমতল জায়গায় হাঁটতে হবে। উচু-নিচু কিংবা ভাঙা রাস্তায় হাঁটলে সমস্যা আরও বাড়তে পারে। আবার সিঁড়ি উঠা-নামা করা যাবে না। এতে হাঁটুতে চাপ পড়বে। যা থেকে ব্যথা-যন্ত্রণা বাড়বে। এ জন্য হাঁটুতে ব্যথা থাকলে এসব নিয়ম মেনে চলতে হবে।

একটানা নয়: হাঁটুতে যাদের ব্যথা নেই তারা দিনে অন্তত ৪৫ মিনিট ঘাম ঝরিয়ে হাঁটতে পারেন। তবে হাঁটুতে যদি ব্যথা থাকে তাহলে এভাবে হাঁটা চলবে না। এ অবস্থায় বিরতি নিয়ে হাঁটতে হবে। সকালের নাশতা থেকে রাতের খাবার পর্যন্ত, প্রতিবার খাবার খাওয়ার পর ১০ থেকে ১৫ মিনিট করে হাঁটতে পারেন। এতে ওজন নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। একইসঙ্গে ডায়াবেটিস, প্রেশার ও কোলেস্টেরলও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

শুরুতেই চিকিৎসকের কাছে যাওয়া: প্রায় সবাই হাঁটুতে ব্যথা হওয়ার পরই চিকিৎসকের কাছে যান না। প্রথমে নিজেরাই কিছু করার চেষ্টা করেন। ফলে একপর্যায়ে হাঁটু প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হয়। এ জন্য রোগের শুরুতেই যদি চিকিৎসকের কাছে যাওয়া হয়, তাহলে ঝুঁকি থাকে না। ওষুধ সেবনেই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। এ জন্য হাঁটু ব্যথাকে অবহেলা না করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

রোগপ্রতিরোধে করণীয়: নিয়মিত শরীরচর্চার অভ্যাস সবার নেই। এমনকি হেঁটে চলাফেরার অভ্যাসও নেই। এ জন্য হাঁটু ব্যথার সম্ভাবনা থাকে। তাই যারা এখনো এ সমস্যায় আক্রান্ত হননি, তারা নিয়ম করে প্রতিদিন হাঁটুন। দিনে ৪৫ মিনিট হাঁটলেই সমস্যা থেকে দূরে থাকা সম্ভব। তা না হলে সমস্যা জটিল হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *