ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতরের ছুটি পাঁচদিন এবং পূজার ছুটি দুই দিন করার পরিকল্পনা করছে সরকার। এতে মুসলমানদের প্রধান দুই ধর্মীয় উৎসব পবিত্র রমজান ও কোরবানি ঈদের ছুটি পাঁচ দিন করে করতে যাচ্ছে সরকার। এছাড়া হিন্দুদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার ছুটি তিন দিন করা হতে পারে।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) তার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের সভা হবে। ২০২৫ সালের সরকারি ছুটির তালিকা অনুমোদনের জন্য এই সভায় উত্থাপনের কথা রয়েছে। উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ওঠার পর অনুমোদন পেলে সেটা আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে। এছাড়া প্রত্যাগত অভিবাসী নীতিমালা অনুমোদনের জন্য উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে রয়েছে। এর বাইরে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নির্ধারণ-সংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে টেবিলে উত্থাপন হতে পারে বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একটি সূত্র জানিয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সাধারণত ঈদে তিন দিন ও পূজায় একদিন ছুটি থাকে। তবে এবার পূজার ছুটি নির্বাহী আদেশে একদিন বাড়ানো হয়েছিল। রোজা ও কোরবানি ঈদের ছুটি পাঁচ দিন করে নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। ঈদের দিন এবং ঈদের আগে–পরে দুই দিন করে এই ছুটি নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া দুর্গাপূজার ছুটি তিন দিন নির্ধারণের সুপারিশ করা হয়েছে। ঈদে মানুষের বাড়ি ফেরার সুবিধার্থে কয়েক বছর ধরে নির্বাহী আদেশে ঈদের ছুটি এক দিন করে বাড়িয়ে আসছে সরকার। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় দুই ঈদ এবং দুর্গাপূজার ছুটি বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হলেও পরে তা আর আলোর মুখ দেখেনি। ফলে এখন ঈদে তিন দিন এবং পূজায় এক দিন সাধারণ ছুটি থাকে।
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার প্রস্তাব রেখে ‘সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, পাবলিক নন-ফিন্যানশিয়াল করপোরেশনসহ স্বশাসিত সংস্থাগুলো সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা নির্ধারণ অধ্যাদেশ, ২০২৪–এর খসড়া চূড়ান্ত করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এই খসড়া অনুমোদনের জন্য আগামীকাল উপদেষ্টা পরিষদের সভায় উপস্থাপন হতে পারে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানো হলেও অবসরের বয়স বাড়বে কি না, সে বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় আলোচনার পর সিদ্ধান্ত হবে বলে ওই সূত্র জানায়।
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা পুরুষের জন্য ৩৫ বছর এবং নারীদের জন্য ৩৭ বছর করার সুপারিশ করেছে আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন পর্যালোচনা কমিটি। সরকারি চাকরিতে প্রবেশের যৌক্তিক বয়স নির্ধারণের বিষয়ে সুপারিশ দিতে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে ৩০ সেপ্টেম্বর কমিটি করে সরকার।
পর্যালোচনা কমিটি চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর সুপারিশ করলেও অবসরের বয়সসীমা নিয়ে কোনো সুপারিশ করেনি। বর্তমানে সর্বোচ্চ ৩০ বছর বয়স পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে ঢোকা যায়। আর ৫৯ বছর বয়সে অবসরে যান সরকারি কর্মচারীরা। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানেরা ৩২ বছর বয়স পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে যোগ দিতে পারেন, আর ৬০ বছর বয়সে অবসরে যান।
Leave a Reply