সাকিবকে নিয়ে একের পর এক নাটক : ব্যাখ্যা দিলেন ক্রীড়া উপদেষ্টা, ভক্তদের মাঝে বিশাল ক্ষোভ!

সাকিব আল হাসানের দেশে ফিরে শেষ আন্তর্জাতিক টেস্ট খেলার পরিকল্পনা নিয়ে কয়েকদিন ধরে চলা নাটকীয়তা শেষে নতুন মোড় নিয়েছে। তিনি মিরপুরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নিজের শেষ টেস্ট খেলার কথা থাকলেও এখন সেই পরিকল্পনা বাতিল হয়েছে। দেশে আসার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরুর পর মাঝপথে দুবাইয়ে থামতে হয় সাকিবকে, যেখানে তার দেশে আসার প্রক্রিয়া স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ আজ বৃহস্পতিবার রাতে এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বিষয়টি ব্যাখ্যা করেন। তিনি জানান, বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য সাকিবকে দেশে আসতে নিরুৎসাহিত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সাকিবের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ও ক্ষোভের প্রসঙ্গ তুলে ধরে উপদেষ্টা আরও বলেন যে, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি এবং সাকিবের প্রতি সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে তার শেষ টেস্ট খেলার পরিকল্পনা আপাতত স্থগিত রইলো এবং ক্রীড়ামোদীদের কাছে বিষয়টি কিছুটা হতাশাজনক হয়ে উঠেছে।

বিবৃতিতে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, ‘আমি নিজেও চেয়েছি, সাকিব আল হাসানের মতো একজন ক্রিকেটার দেশের মাটিতে অবসর নিক। সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়েছে। তবে, প্রথম দিকেই বলেছি সাকিব আল হাসানের আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কারণে জনমনে ক্ষোভ রয়েছে যা স্বাভাবিক। রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করাসহ জনমনের ক্ষোভ নিরসনে তিনি ফেসবুক পোস্ট দিলেও সাম্প্রতিক প্রতিবাদে প্রতীয়মান হয়েছে যে তা যথেষ্ট ছিল না। যারা প্রতিবাদ করছে তাদেরও তা করার সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে। সাউথ আফ্রিকা ও বাংলাদেশের মধ্যকার সিরিজে কোনপ্রকার অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতেই আপাতত দেশে খেলতে আসার ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করে বিসিবিকে পরামর্শ দিতে হয়েছে।’

এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার আহবান ক্রীড়া উপদেষ্টার, ‘খেলোয়াড়দের নিরাপত্তার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে দেশের ভাবমূর্তি রক্ষার আশু ব্যবস্থা হিসেবেই এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। তবে সকলেরই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিৎ বলে মনে করি। কোন অভিযোগ থাকলে আইনি প্রক্রিয়ার আশ্রয় নিয়েই তার সমাধান খোঁজা যেতে পারে।’

প্রসঙ্গত, ২১ অক্টোবর থেকে মিরপুরে সিরিজের প্রথম টেস্টে মুখোমুখি হবে নাজমুল হোসেন শান্ত ও টেম্বা বাভুমার দল। এই ম্যাচটি দিয়েই সাদা পোশাক তুলে রাখতে চেয়েছিলেন সাকিব। এরপর তাকে নিয়েই প্রথম টেস্টের স্কোয়াড ঘোষণা করে বিসিবি। তবে তার দেশে আসা স্থগিত হয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের স্কোয়াডেও যে পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে সেটা অনুমান করাই যায়!

এর আগে টাইগার এই অলরাউন্ডারের সঙ্গে কথা হয়েছে ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ‘ইএসপিএন ক্রিকইনফো’র। বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় সাকিব বলেন, ‘পরবর্তী সময়ে কোথায় যাব, জানি না। তবে এটা প্রায় নিশ্চিত যে আমি দেশে ফিরছি না।’ তাকে জাতীয় দল থেকে বাদ দিতে আজও বিক্ষোভ হয়েছে বিসিবি কার্যালয় ও শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামের সামনে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *