শরীরে শ্বেত রক্তকণিকা বাড়াবে যেসব খাবার!

আমাদের মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত পুরো শরীর কোষ দিয়ে গঠিত। কিন্তু বাইরের জীবাণু থেকে শরীরকে রক্ষার জন্য কিন্তু সব কোষ কাজ করে না। আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ বা জীবাণুর আক্রমণ ঠেকানার জন্য যে কোষগুলো কাজ করে তাদের নাম শ্বেত রক্তকণিকা বা হোয়াইট ব্লাড সেল; সংক্ষেপে ডবলিউবিসি। শরীরে যখনই অবাঞ্ছিত বস্তু বা জীবাণু প্রবেশ করে, তখনই ডবলিউবিসি ওই জীবাণুগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করে। এটা কিন্তু প্রতিনিয়ত অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টাই চলছে; কারণ নাক, কান, চোখ মুখের মাধ্যমে বা কোথাও কেটে গেলে সেখান দিয়ে প্রতিনিয়ত জীবাণু আমাদের শরীরে প্রবেশ করছে। যখন সেই জীবাণু শক্তির তুলনায় ডাবলিউবিসির সংখ্যা ও শক্তি কম থাকে, তখনই আমরা রোগাক্রান্ত হই।

অতএব শ্বেত রক্তকণিকার সংখ্যা পরিমিত থাকলে এবং ভালোভাবে কাজ করার শক্তি থাকলে আমরা সুস্থ থাকব। বিজ্ঞানীদের বিভিন্ন গবেষণায় এটা প্রমাণিত যে শ্বেত রক্তকণিকার সংখ্যা পরিমিত ও সর্বাধিক শক্তির জন্য আমাদের তিনটি জিনিস ঠিক রাখা জরুরি।

১. সুষম খাবার, ২. প্রতিদিন ব্যায়াম করা, ৩. মানসিক সুস্থতা বা মানসিক অবস্থা ভালো রাখা

এর সঙ্গে নির্দিষ্ট এই কয়েকটি খাবারও খেতে পারেন। এই সব খাবারও শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

এই তালিকায় প্রথমেই রয়েছে কমলা। নিয়মিত ভাবে কমলা খেলে একাধিক সংক্রমণজনিত সমস্যা খুব সহজেই এড়িয়ে যাওয়া যায়। কমলার মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি। আর কমলার মধ্যে থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও। এই কমলা নিয়মিত খেলে রক্তে শ্বেতরক্তকণিকার সংখ্যা বাড়ে।
আমের মধ্যেও ভিটামিন সি থাকে। যদি রক্তশর্করার পরিমাণ খুব বেশি না থাকে তাহলে আম খেতে পারেন। দৈনিক চাহিদার ৭৫ শতাংশ পূরণ হয় এই আম থেকে।
ভিটামিন সি এর বড় উৎস হলো পেয়ারা। পেয়ারা রক্তে শ্বেতরক্তকণিকার পরিমাণ বাড়ায়। সেই সঙ্গে ব্লাডসুগারের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে রাখে।
আদার মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শ্বেতরক্তকণিকা বাড়াতে সাহায্য করে। অটোইমিউন রোগে আক্রান্তরাও নিয়মিত ভাবে আদা খান।
শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য প্রয়োজন মিনারেল ও ভিটামিন সমৃদ্ধ সুষম খাবার। জিংক আমাদের শ্বেত রক্ত কণিকা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় জিংকযুক্ত খাবার রাখা প্রয়োজন। এছাড়াও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ভিটামিন সিসহ অন্যান্য ভিটামিনের ভূমিকা রয়েছে।
এর সঙ্গে অবশ্যই নিয়মিত ব্যায়ামের প্রয়োজন। অবশ্য ব্যায়াম করার কথা বলতেই আমাদের মাথায় জিমে যাওয়া বা যোগাসন করার কথা আসে। ব্যাপারটা আসলে এই দুটোতে সীমাবদ্ধ না। বরং আমরা জেনে নিতে পারি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে বা ঠিক রাখতে আমাদের করণীয় ব্যায়াম সম্পর্কে।
ব্রকলির মধ্যে থাকে ভিটামিন সি, বি ৬, ভিটামিন এ। যা শ্বেত রক্তকণিকা বাড়াতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে নিয়মিত ব্রকলি খেলে রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়ে। এর সঙ্গে নিয়মিত ভাবে পালং শাক, রসুন, কিশমিশ, টকদই, খেজুর এসব খান। এই সব খাবারে অনেকটা পরিমাণ শ্বেতরক্তকণিকা বাড়ে। সংক্রমণ দূর হয়।
যগি কোনও কারণে মনে হয় যে শরীরে রক্তকণিকার সমস্যা কমেছে বা বারবার সংক্রমণজনিত কোনও সমস্যা হচ্ছে তাহলে দেরী না করে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যান। প্রয়োজনীয় রক্তপরীক্ষা করানোর পাশাপাশি নিয়মিত ওষুধ খাওয়া প্রয়োজন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *